সীমানার সাথে যুদ্ধ: বাঙালি সংস্কৃতি, ভাষা, রবীন্দ্রনাথ, মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী প্রসঙ্গে
বিষয়ের কোনো শেষ নেই। লেখকের সুবিধা ও অসুবিধা সেখানেই। তবে সীমানার সাথে যুদ্ধ গ্রন্থটি সাজাতে খুব বেশি অসুবিধা হয়নি। আমার বেশ কিছু প্রবন্ধ থেকে মাত্র পনেরটি বেছে একটি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে সেটি সীমানার সাথে যুদ্ধ শিরোনামেই যে লেখাটি রয়েছে, তাতেই বিধৃত। ক্রমশ নিজেকে বা নিজেদেরকে অতিক্রম করা আধুনিকতার বড় লক্ষণ।
অধ্যাপক তপন রুদ্র জন্ম : ১৫ আষাঢ়, ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১ জুলাই, ১৯৫০। পেশায় ইংরেজি বিষয়ের অধ্যাপক। সর্বশেষ কর্মস্থল বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ, রংপুর। প্রফেসর পদে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। বাবা বেণীমাধব রুদ্র আর মা জীবনবালা রুদ্র দুজনই প্রয়াত। এঁদের আদি নিবাস বৃহত্তর ঢাকার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে। তবে তপন রুদ্রের আজন্ম বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রাম জেলা শহরে। লেখাপড়া প্রথমত কুড়িগ্রাম রিভারভিউ হাইস্কুল, তারপর উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ এবং স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্থায়ী নিবাস পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়া, কুড়িগ্রাম শহর। লেখালেখির প্রতি আগ্রহ ছাত্রজীবন থেকেই। স্কুল-কলেজের বার্ষিকী, বিভিন্ন বছরে একুশে সংকলন এবং স্থানীয় পত্রপত্রিকায় তার লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি ছাপা হতো। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য প্রচুর গীতিনক্শা লিখতেন একসময়ে। তবে অধ্যাপনা জীবনেই তিনি শুরু করেন মূল লেখালেখির কাজ। স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং সাময়িকীগুলোতে অসংখ্য লেখা প্রকাশ পেলেও পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ প্রকাশে এত দিন বলা যায় পিছিয়েই ছিলেন। তাঁর প্রথম গ্রন্থ কবিতায় শ্রেণীঘাত একটি বহুমাত্রিক কাব্যগ্রন্থ, যেটি ঢাকায় প্রকাশিত হয়েছে ফেব্রুয়ারি ২০০৭-এ। বইটি প্রকাশ করেছিল জাতীয় সাহিত্য প্রকাশনী, ঢাকা।
ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাসমনন, সভ্যতা গঠন ও বিনোদন সন্ধানে অগ্রগতি হতে গেলে অবশ্যই সাহসী হতে হয়। নতুন প্রয়োজনকে স্বীকার করবার শক্তিমান আগ্রহ ব্যক্ত করতে হয়, রবীন্দ্রনাথ যা করতে পেরেছিলেন। কবি সুকান্ত সে শক্তি ধারণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাসংগ্রামে বাঙালি জাতি তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। নিজের চারপাশে গড়ে ওঠা শক্ত দেয়ালটা টিকিয়ে রাখার কোনো প্রয়োজন না থাকলে তা সরিয়ে ফেলে আলোটাকে বড় প্রান্তরে স্বরূপে দেখতে গেলে চোখ ধাঁধানো ঝলকানি সহ্য করবার ক্ষমতা থাকা চাই। একদা সৃষ্টরীতি ও মূল্যবোধ পরিবর্তনের পথে গেলে তা বিলীন হয়ে যাবে, না আরও উৎকর্ষম-িত হবে, তা নিশ্চিত হবে-ই সময়ের আগামী যাত্রায়। সীমানার সাথে সময়ের সংঘর্ষ অনিবার্য। একে রুখবে কে? তাই সেই যুদ্ধের অস্তিত্বকে আমি মানি এবং আমার বইয়ের জন্য বেছে নেয়া সব কটি লেখাতেই সেই অনিবার্য যুদ্ধকে প্রত্যক্ষ করেছি বলে বইটির নাম শেষ পর্যন্ত হয়েছে সীমানার সাথে যুদ্ধ।
Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “সীমানার সাথে যুদ্ধ: বাঙালি সংস্কৃতি, ভাষা, রবীন্দ্রনাথ, মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী প্রসঙ্গে” Cancel reply
Reviews
There are no reviews yet.