লেখক দ্রাবিড় সৈকত তরুণ চিত্রশিল্পী, সমালোচক ও গবেষক—চিত্রশিল্প, দর্শন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গবেষণাপত্রে তাঁর চিন্তাশীল বেশকিছু প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান গ্রন্থটি এই ধারাবাহিকতার অংশ। তিনি মনে করেন, “বাঙলার চিত্রকলার ইতিহাস নেই। এখানে শিল্পজগতে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার, এই ঘন অন্ধকার আরও প্রগাঢ় করে তুলেছে লোকশিল্প নামের এক অতিজীর্ণ আদিম প্রকরণ। আমাদের বারবার দখল, হত্যা ও লুণ্ঠনের নথিকে ইতিহাস বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসবহির্ভূত হয়ে সুদীর্ঘ বঞ্চনায় আমরা মানসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অসহায় অবলম্বনহীন বিকলাঙ্গ ভিক্ষুক হয়ে বেঁচে আছি। সর্বপ্লাবী কালচারাল জেনোসাইডের বীভৎস বিকৃতিকে এখন ‘শিল্প শিল্প’ বলে আমরা বুক চাপড়ে মাতম করছি। এই লোকালয়ের অবসন্ন মুহ্যমান মুমূর্ষু মানুষ ‘বাঙলার চিত্রকলা’ বলতে এখন তথাকথিত লোকচিত্রের কিছু একঘেয়ে ফর্ম-ফর্মুলা, মোটিফ, কিছু রূপ-রস-লাবণ্যহীন অমার্জিত মৌলিক রং, অঙ্কন দক্ষতাহীন, পরিপ্রেক্ষিত-প্রমাণ-মাত্রাবিহীন, সময়ের ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া, স্থুল কিছু বর্ণলেপনকেই বোঝে। নিঃসন্দেহে এই প্রপঞ্চ একটি পশ্চিমা ফাঁদ। বাঙলার মূলধারার চিত্রকলা লোকচিত্র হওয়া—নান্দনিক, যৌক্তিক, বৌদ্ধিক এবং তাত্ত্বিক জায়গা থেকে একবারেই অসম্ভব। বরং লোকচিত্রকে বাঙলার চিত্রধারা হিসেবে প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টার পেছনে লুকিয়ে আছে একটি জাতিকে অপমানিত ও হতোদ্যম করে দেওয়ার সুপরিকল্পিত চক্রান্ত।” বাঙলার চিত্রকলায় বর্তমান পরনির্ভরশীল বাস্তবতাকে বদলে দিতে হলে অবশ্যই আমাদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে ইতিহাসের প্রকৃত পরম্পরা। ইতিহাসের পুনর্নির্মাণের জন্য আমাদের কিছু মৌলিক প্রশ্নের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হবে—শিল্পী কেন সৃষ্টি করছে? কার জন্য সৃষ্টি করছে? কী সৃষ্টি করছে? কোন ভৌগোলিক অবস্থায়, কোন সাংস্কৃতিক শর্তের উপস্থিতিতে, কোন শাসনামলে সৃষ্টি করছে? এসবের হদিস না থাকলে শিল্প সম্পর্কে একরাশ মুগ্ধতা অথবা একগুচ্ছ হতাশা নিয়েই তাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
আশা করা যায়, গ্রন্থটি শিল্পবোদ্ধা এবং শিল্পানুরাগীদের চিন্তার খোরাক জোগাবে।
বাঙলার চিত্রকলা : ইতিহাসের বিভ্রান্ত এবং মনন-মনীষায় ইউরোপমুখিতার মর্মভেদ
লেখক দ্রাবিড় সৈকত তরুণ চিত্রশিল্পী, সমালোচক ও গবেষক—চিত্রশিল্প, দর্শন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গবেষণাপত্রে তাঁর চিন্তাশীল বেশকিছু প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান গ্রন্থটি এই ধারাবাহিকতার অংশ। তিনি মনে করেন, “বাঙলার চিত্রকলার ইতিহাস নেই। এখানে শিল্পজগতে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার, এই ঘন অন্ধকার আরও প্রগাঢ় করে তুলেছে লোকশিল্প নামের এক অতিজীর্ণ আদিম প্রকরণ। আমাদের বারবার দখল, হত্যা ও লুণ্ঠনের নথিকে ইতিহাস বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসবহির্ভূত হয়ে সুদীর্ঘ বঞ্চনায় আমরা মানসিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অসহায় অবলম্বনহীন বিকলাঙ্গ ভিক্ষুক হয়ে বেঁচে আছি। সর্বপ্লাবী কালচারাল জেনোসাইডের বীভৎস বিকৃতিকে এখন ‘শিল্প শিল্প’ বলে আমরা বুক চাপড়ে মাতম করছি। এই লোকালয়ের অবসন্ন মুহ্যমান মুমূর্ষু মানুষ ‘বাঙলার চিত্রকলা’ বলতে এখন তথাকথিত লোকচিত্রের কিছু একঘেয়ে ফর্ম-ফর্মুলা, মোটিফ, কিছু রূপ-রস-লাবণ্যহীন অমার্জিত মৌলিক রং, অঙ্কন দক্ষতাহীন, পরিপ্রেক্ষিত-প্রমাণ-মাত্রাবিহীন, সময়ের ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া, স্থুল কিছু বর্ণলেপনকেই বোঝে। নিঃসন্দেহে এই প্রপঞ্চ একটি পশ্চিমা ফাঁদ। বাঙলার মূলধারার চিত্রকলা লোকচিত্র হওয়া—নান্দনিক, যৌক্তিক, বৌদ্ধিক এবং তাত্ত্বিক জায়গা থেকে একবারেই অসম্ভব। বরং লোকচিত্রকে বাঙলার চিত্রধারা হিসেবে প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টার পেছনে লুকিয়ে আছে একটি জাতিকে অপমানিত ও হতোদ্যম করে দেওয়ার সুপরিকল্পিত চক্রান্ত।” বাঙলার চিত্রকলায় বর্তমান পরনির্ভরশীল বাস্তবতাকে বদলে দিতে হলে অবশ্যই আমাদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে ইতিহাসের প্রকৃত পরম্পরা। ইতিহাসের পুনর্নির্মাণের জন্য আমাদের কিছু মৌলিক প্রশ্নের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হবে—শিল্পী কেন সৃষ্টি করছে? কার জন্য সৃষ্টি করছে? কী সৃষ্টি করছে? কোন ভৌগোলিক অবস্থায়, কোন সাংস্কৃতিক শর্তের উপস্থিতিতে, কোন শাসনামলে সৃষ্টি করছে? এসবের হদিস না থাকলে শিল্প সম্পর্কে একরাশ মুগ্ধতা অথবা একগুচ্ছ হতাশা নিয়েই তাদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
আশা করা যায়, গ্রন্থটি শিল্পবোদ্ধা এবং শিল্পানুরাগীদের চিন্তার খোরাক জোগাবে।
৳ 495.00 ৳ 396.00
In stock
Book Details
Language | |
---|---|
Binding Type | |
ISBN | |
Publishers | |
Release date | |
Pages | |
Size | 8.3 X 6 |
Reviews
There are no reviews yet.