ঢাকার ইতিহাসে আমরা দুটো নবাব পরিবারের সন্ধান পাই—একটি মোগল নবাব এবং আরেকটি ব্রিটিশ উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নবাব। কথিত আছে যে, ঢাকার নবাবেরা ভাগ্যান্বেষণে প্রথমে দিল্লি থেকে সিলেট ও পরে ইউরোপীয়দের সাথে বাণিজ্যসূত্রে ঢাকায় আগমন করেন। ঢাকায় আসার সময় তাদের পারিবারিক উপাধি ছিল ‘খাজা’। পরে ব্রিটিশ সান্নিধ্যে এসে জনহিতকর কাজের জন্য বংশানুক্রমে ‘নবাব’ উপাধিতে ভূষিত হন।
ইংরেজদের সান্নিধ্য লাভ তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করে। সিপাহিযুদ্ধকালে ইংরেজদের পক্ষ নিয়ে তাদের আস্থায় আসেন এবং পুরো ঊনবিংশ শতকে তাদের সাথে সামাজিক মেলামেশা, বিনোদন ও মিউনিসিপালিটির মাধ্যমে জনহিতকর কার্যে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকার নবাবরা মহা সমারোহে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবাদি পালন করতেন। মহররম, ঈদ ও জন্মাষ্টমীরও নবাবরা ছিলেন অকৃত্রিম পৃষ্ঠপোষক। উনিশ ও বিশ শতকে ঢাকায় ওয়াটার ওয়ার্কস, পয়ঃপ্রণালি, বিজলিবাতি প্রতিষ্ঠা এবং রাস্তাঘাট নির্মাণে এ পরিবারের অবদান নমস্য। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে সার্বিক উন্নয়নে ইউরোপীয় প্রচেষ্টার সাথে নবাবদের সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ঢাকায় রইস শ্রেণি ও ঢাকাবাসীদের সামাজিক অনুশাসন ও সুশাসনের বিষয়টি বিস্ময়করভাবে সমন্বয় করেছে তাদের ‘পঞ্চায়েত প্রথা’। এ গ্রন্থে বিশ শতকের ঢাকার পঞ্চায়েত প্রথা সম্পর্কে সবিশেষ আলোচনা আছে। উনিশ ও বিশ শতকের ঢাকার রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে পূর্ব বাংলার দাবি-দাওয়া অগ্রসর করার পেছনে ঢাকার নবাব পরিবার অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে। ঢাকার মোহামেডান এডুকেশন সোসাইটি ও পরবর্তীকালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশের সমাজ-রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি এবং মুসলিম শিক্ষা সম্প্রসারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অন্যদের সাথে নবাব পরিবারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। দেশ ভাগের পরে এ পরিবারের দৃশ্যমান রাজনৈতিক উত্থান লক্ষ করা গেলেও রাষ্ট্রশাসন ও রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে তাদের একপেশে ও অগণতান্ত্রিক ভূমিকা জাতিকে হতাশ করে। পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনে এ পরিবারের ভূমিকা গণস্রোতের বিপরীতমুখী অবস্থান নেয়। স্বাধীনতার পরে সংঘবদ্ধ নবাব পরিবার বিচ্ছিন্ন ও বিনাশের পথ ধরে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে। উনিশ ও বিশ শতকের ঢাকার নবাবদের প্রভাবশালী আহসান মঞ্জিলটি এখন একটি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত জাদুঘরে রূপ নিয়ে টিকে আছে। ‘ঢাকার নবাব পরিবার ও তৎকালীন ঢাকার সমাজ’ গ্রন্থটি উনিশ ও বিশ শতকের ঢাকার নবাব তথা ঢাকা সমাজের একটি অনবদ্য দলিল। সুখপাঠ্য এ গ্রন্থটি বহুল সমাদৃত হওয়ার দাবি রাখে।
ঢাকার নবাব পরিবার ও তৎকালীন ঢাকার সমাজ
ঢাকার ইতিহাসে আমরা দুটো নবাব পরিবারের সন্ধান পাই—একটি মোগল নবাব এবং আরেকটি ব্রিটিশ উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নবাব। কথিত আছে যে, ঢাকার নবাবেরা ভাগ্যান্বেষণে প্রথমে দিল্লি থেকে সিলেট ও পরে ইউরোপীয়দের সাথে বাণিজ্যসূত্রে ঢাকায় আগমন করেন। ঢাকায় আসার সময় তাদের পারিবারিক উপাধি ছিল ‘খাজা’। পরে ব্রিটিশ সান্নিধ্যে এসে জনহিতকর কাজের জন্য বংশানুক্রমে ‘নবাব’ উপাধিতে ভূষিত হন।
ইংরেজদের সান্নিধ্য লাভ তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করে। সিপাহিযুদ্ধকালে ইংরেজদের পক্ষ নিয়ে তাদের আস্থায় আসেন এবং পুরো ঊনবিংশ শতকে তাদের সাথে সামাজিক মেলামেশা, বিনোদন ও মিউনিসিপালিটির মাধ্যমে জনহিতকর কার্যে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকার নবাবরা মহা সমারোহে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসবাদি পালন করতেন। মহররম, ঈদ ও জন্মাষ্টমীরও নবাবরা ছিলেন অকৃত্রিম পৃষ্ঠপোষক। উনিশ ও বিশ শতকে ঢাকায় ওয়াটার ওয়ার্কস, পয়ঃপ্রণালি, বিজলিবাতি প্রতিষ্ঠা এবং রাস্তাঘাট নির্মাণে এ পরিবারের অবদান নমস্য। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে সার্বিক উন্নয়নে ইউরোপীয় প্রচেষ্টার সাথে নবাবদের সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ঢাকায় রইস শ্রেণি ও ঢাকাবাসীদের সামাজিক অনুশাসন ও সুশাসনের বিষয়টি বিস্ময়করভাবে সমন্বয় করেছে তাদের ‘পঞ্চায়েত প্রথা’। এ গ্রন্থে বিশ শতকের ঢাকার পঞ্চায়েত প্রথা সম্পর্কে সবিশেষ আলোচনা আছে। উনিশ ও বিশ শতকের ঢাকার রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে পূর্ব বাংলার দাবি-দাওয়া অগ্রসর করার পেছনে ঢাকার নবাব পরিবার অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে। ঢাকার মোহামেডান এডুকেশন সোসাইটি ও পরবর্তীকালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশের সমাজ-রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি এবং মুসলিম শিক্ষা সম্প্রসারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অন্যদের সাথে নবাব পরিবারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। দেশ ভাগের পরে এ পরিবারের দৃশ্যমান রাজনৈতিক উত্থান লক্ষ করা গেলেও রাষ্ট্রশাসন ও রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে তাদের একপেশে ও অগণতান্ত্রিক ভূমিকা জাতিকে হতাশ করে। পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনে এ পরিবারের ভূমিকা গণস্রোতের বিপরীতমুখী অবস্থান নেয়। স্বাধীনতার পরে সংঘবদ্ধ নবাব পরিবার বিচ্ছিন্ন ও বিনাশের পথ ধরে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে। উনিশ ও বিশ শতকের ঢাকার নবাবদের প্রভাবশালী আহসান মঞ্জিলটি এখন একটি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত জাদুঘরে রূপ নিয়ে টিকে আছে। ‘ঢাকার নবাব পরিবার ও তৎকালীন ঢাকার সমাজ’ গ্রন্থটি উনিশ ও বিশ শতকের ঢাকার নবাব তথা ঢাকা সমাজের একটি অনবদ্য দলিল। সুখপাঠ্য এ গ্রন্থটি বহুল সমাদৃত হওয়ার দাবি রাখে।
৳ 550.00 ৳ 440.00
In stock
Book Details
Language | |
---|---|
Binding Type | |
ISBN | |
Publishers | |
Release date | |
Pages | |
Size | 8.7 X 5.5 |
About The Author
দেলওয়ার হাসান
দেলওয়ার হাসান: লেখক, ইতিহাস গবেষক ও সাংবাদিক। জন্ম: ১৯৫৭ সালে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামে। অধ্যয়ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও সাহিত্য, আইন, ইতিহাস বিভাগ থেকে এম.ফিল এবং পি.এইচডি প্রোগ্রামে রিফিউজি নিয়ে গবেষণা। কর্মজীবনে তিনি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, দৈনিক ইত্তেফাক, ডেইলি ইনডিপেনডেন্ট, ডেইলি নিউ নেশনসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দায়িত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক কাগজ’ পত্রিকার তিনি ছিলেন বাংলাদেশের আবাসিক সম্পাদক।
দেলওয়ার হাসান ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন সাময়িকী, মূলধারার দৈনিক ও গবেষণা পত্রিকায় লেখালেখি করে আসছেন। তিনি রেডিও ও টেলিভিশনে বিষিয়ভিত্তিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত ‘বাংলাপিডিয়া’ ও ‘ঢাকা কোষ’ গ্রন্থের সহকারী সম্পাদক ছিলেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির হেরিটেজ মিউজিয়াম প্রকল্পের ‘কনসালটেন্ট’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং হেরিটেজ মিউজিয়াম প্রকাশিত ৩টি গ্রন্থের সহযোগী সম্পাদক। দেশে ও বিদেশে অনেক আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদ, লায়ন্স ক্লাবসহ অনেক সামাজিক ও বিদ্বৎ প্রতিষ্ঠানের সদস্য। ঢাকা কোষ, বাংলাপিডিয়া, ঢাকা চরিতাভিধানসহ বিভিন্ন গবেষণা গ্রন্থে তাঁর এক হাজারের বেশি ভুক্তি রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও জার্নালে তাঁর পাঁচ শতাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। ঢাকার ৪০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থ ‘কমার্শিয়াল হিস্ট্রি অব ঢাকা’ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতি অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে তাঁর ২০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘সৈয়দ এমদাদ আলী’, ডিসিসিআই প্রকাশিত ‘ঢাকার বাণিজ্যিক ইতিহাস’ অন্যতম।
Reviews
There are no reviews yet.