মুসলিম সাহিত্য সমাজ: সভার সংক্ষিপ্ত কার্যবিবরণী ১৯২৬-১৯৩৮
উনিশ-বিশ শতকে বাঙালি মুসলমানের জাগরণে সভা-সমিতির একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল। সংস্কার ও রক্ষণশীলতা, অশিক্ষা ও গোঁড়ামির বলয় থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে বাঙালি মুসলমানকে দিশা দিয়েছিল এই সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় সংগঠনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯২৬-এর একেবারে গোড়ার দিকে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম সাহিত্য সমাজ। ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’ – এই বীজমন্ত্র নিয়ে সাহিত্য সমাজের যাত্রা হয়েছিল শুরু। বারো বছর আয়ুষ্কালের এই সংগঠনটির বার্ষিক মুখপত্রের নাম ছিল শিখা। সংগঠনের নামের আগে ‘মুসলিম’ শব্দটি থাকলেও এখানে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ছিল না-হিন্দু-মুসলমান উভয়েই এখানে স্বচ্ছন্দে অংশ নিয়েছেন। উদার মুক্তচিন্তার সঙ্গে সম্প্রদায়-সম্প্রীতির একটি আবহও গড়ে উঠেছিল সংগঠনের কর্মকান্ডে।
আবুল আহসান চৌধুরী মূলত প্রাবন্ধিক ও গবেষক। সমাজমনস্ক ও ঐতিহ্যসন্ধানী। তাঁর চর্চা ও গবেষণার বিষয় ফোকলোর, উনিশ শতকের সমাজ ও সাহিত্য, সাময়িকপত্র, আধুনিক সাহিত্য, সংগীত-সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক ইতিহাস। তাঁর লালন সাঁই, কাঙাল হরিনাথ ও মীর মশাররফ হোসেন-বিষয়ক গবেষণা-কাজ দেশে-বিদেশে সমাদৃত হয়েছে। জন্ম কুষ্টিয়া জেলার মজমপুরে, ১৩ জানুয়ারি ১৯৫৩। সাহিত্যচর্চার পেছনে আছে পারিবারিক আবহ ও আনুকূল্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি। প্রায় সাঁইত্রিশ বছর অধ্যাপনা-পেশায় যুক্ত। বর্তমানে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর। পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লালনমেলা সমিতির লালন পুরস্কার (২০০০), বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ পুরস্কার (কলকাতা, ২০০৮) এবং গবেষণায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (ঢাকা, ২০০৯)।
উনিশ-বিশ শতকে বাঙালি মুসলমানের জাগরণে সভা-সমিতির একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল। সংস্কার ও রক্ষণশীলতা, অশিক্ষা ও গোঁড়ামির বলয় থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে বাঙালি মুসলমানকে দিশা দিয়েছিল এই সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় সংগঠনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯২৬-এর একেবারে গোড়ার দিকে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম সাহিত্য সমাজ। ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’ – এই বীজমন্ত্র নিয়ে সাহিত্য সমাজের যাত্রা হয়েছিল শুরু। বারো বছর আয়ুষ্কালের এই সংগঠনটির বার্ষিক মুখপত্রের নাম ছিল শিখা। সংগঠনের নামের আগে ‘মুসলিম’ শব্দটি থাকলেও এখানে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ছিল না-হিন্দু-মুসলমান উভয়েই এখানে স্বচ্ছন্দে অংশ নিয়েছেন। উদার মুক্তচিন্তার সঙ্গে সম্প্রদায়-সম্প্রীতির একটি আবহও গড়ে উঠেছিল সংগঠনের কর্মকান্ডে। এই মুসলিম সাহিত্য সমাজের সভার বিবরণ একটি বাঁধানো খাতায় লিখে রাখা হতো। মুসলিম সাহিত্য সমাজের সাধারণ ও বার্ষিক অধিবেশনের কার্যবিবরণী এই সংগঠনের কর্মকা-ের মূল্যবান ও প্রামাণ্য উপকরণ। সাহিত্য সমাজের এই কার্যবিবরণী মূলত সংগঠনের নির্বাচিত বা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকই গুছিয়ে লিখে রাখতেন। যতদিন সমিতির কার্যক্রম চলেছিল, সেই বারো বছরের সভার বিবরণী-খাতা একসময় কাজী আবদুল ওদুদের কাছ থেকে তাঁর জামাতা, ওই সমাজেরই একজন সক্রিয় সদস্য, শামসুল হুদার হাতে আসে। দীর্ঘকাল অযত্নে পড়ে-থাকায় পোকায় কাটা বিবরণীর জীর্ণ খাতাটির বাঁধাই খুলে গিয়ে অবিন্যস্ত হয়ে পড়ে -পৃষ্ঠাও হয়ে ওঠে বিবর্ণ ও নরম। হয়তো আর কিছুকাল পরে এই মূল্যবান সাংস্কৃতিক উপকরণটির কোনো অস্তিত্বই বজায় থাকতো না। সেই বিবেচনায় ড. আবুল আহসান চৌধুরীর উদ্যোগে এই খাতাটির প্রতিলিপি সংস্করণ (ঋধপংরসরষব ঊফরঃরড়হ) পাঠক সমাবেশের সৌজন্যে প্রকাশিত হলো। শিক্ষিত বাঙালি মুসলমানের চেতনায় নাড়া দেওয়ার মতো একটি প্রতিষ্ঠানের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য দলিল প্রকাশের প্রয়োজন ও গুরুত্ব সুধীজন অনুধাবন করলে তা হবে এই কাজের যথাযথ স্বীকৃতি।
Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “মুসলিম সাহিত্য সমাজ: সভার সংক্ষিপ্ত কার্যবিবরণী ১৯২৬-১৯৩৮” Cancel reply
Reviews
There are no reviews yet.