অন্ধকারের উৎস হতে বাঙালির ভুবনের ছয়টি জটিল ও দুর্জেয় প্রহেলিকা সম্পর্কে আলোর অন্বেষা। আলোচনা শুরু হয়েছে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে রহস্যময়ী রমণী বনলতা সেনকে নিয়ে। চূড়ান্ত বিশ্লেষণে বনলতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে তার সাথে চিরাচরিত ব্যাখ্যার কোন মিল নেই। দ্বিতীয় নিবন্ধে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের বিভিন্ন উপেক্ষিত মাত্রা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা। তৃতীয় নিবন্ধের উপজীব্য হলো রাজনৈতিক অস্থিরতা যা বাংলাদেশকে পৃথিবীর ব্যর্থ রাষ্ট্রসমূহের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছে।
আকবর আলি খান জন্ম ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবিনগরে। ইতিহাস পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিএ অনার্স ও এমএ উভয় পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণীতে প্রথম। অর্থনীতি পড়েন কানাডার কুইনস বিশ্ববিদ্যালয়ে। কৃতিত্বের সাথে অর্থনীতিতে এমএ ও পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। প্রায় বারো বছর সচিব ও তদুর্দ্ধ পদ মর্যাদায় সরকারি পদে নিয়োজিত। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিব এবং সেচ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্ব পালন। ২০০১ সালে অসামরিক কর্ম বিভাগের সর্বোচ্চ পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পদে উন্নীত।খ্রি. ২০০৬ এ তিনি প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদায় অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির ব্যর্থতার কারণে পদত্যাগ। তিনি বিবাহিত ও এক কন্যা সন্তানের জনক। রচনাবলী : ড. খান বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো গ্রন্থের লেখক। তার বই Some Aspects of Peasant Behavior in Bengal (এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, ১৯৮২) সম্পর্কে Journal of Economic History শীর্ষক গবেষণামূলক সাময়িকীতে Michelle B McAlpin লিখেছেন, “The study is a significant contribution to the growing Body of new economic history of South Asia”. ড. খান Discovery of Bangladesh (University Press of Bangladesh, ১৯৯৬) গ্রন্থে বাংলাদেশের ইসলামের প্রসার সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞানের তত্ত্বের আলোকে একটি নতুন ব্যাখ্যা ও বাংলাদেশের সমাজ বিশ্লেষণের জন্য একটি নতুন তাত্ত্বিক কাঠামো উপস্থাপন করেন। তার বই পরার্থপরতার অর্থনীতি (ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ২০০১) উভয় বাংলাতেই সমভাবে আদৃত হয়েছে। অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় দেশ এ লিখেছেন “অর্থনীতির তত্ত্ব পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া সহজ নয়। সেই কঠিন কাজটি করেছেন পরার্থপরতার অর্থনীতির লেখক”। আরো লিখেছেন, ‘এই লেখক লিখতে জানেন”। গবেষণা ও প্রকাশনার জন্য পেয়েছেন এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশের জাস্টিস মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্বণপদক, বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলোশিপ ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশের আজীবন সদস্য ও আমেরিকান ইকনোমিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।
রূপসী বাংলার অনির্বচনীয় নিসর্গের পটভূমিতে টিপাইমুখ বাঁধ একটি নতুন অশনি সংকেত। এই বাঁধের স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সমূহের বিশ্লেষণ করা হয়েছে একটি নিবন্ধে। “ভিক্ষার ঝুড়ির” অপবাদ নিয়ে যে রাষ্ট্রের জন্ম আজ সে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, “বাংলাদেশের অর্থনীতি : আশা-নিরাশার দোলাচলে” শীর্ষক নিবন্ধে বাংলাদেশের অর্থনীতির আজকের সবলতা ও দুর্বলতাসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। সর্বশেষ প্রবন্ধে বাংলাদেশ ও বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষিতে ব্যাংক ব্যবস্থা ও নৈতিকতাবোধের সম্পর্ক আলোচিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ক্ষুদ্র ঋণ ও ইসলামী ব্যাংক নিয়ে কিছু মূল্যবান তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে কোন কোন প্রবন্ধের বিষয় জটিল মনে হলেও এই বইয়ে প্রতিটি প্রবন্ধ রম্য রচনার আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। বক্তব্যের স্পষ্টতা ও সরলতা পাঠকদের অন্ধকারের উৎস থেকে আলোর পথে টেনে নিয়ে যাবে। হাসতে হাসতে পাঠক নিজের অজান্তেই জড়িয়ে যাবেন বাঙালির জগত ও জীবনের অনেক প্রহেলিকা নিয়ে বির্তকে। এই বই সাধারণ পাঠকদের জন্য পরার্থপরতার অর্থনীতি গ্রন্থের লেখকের একটি অসাধারণ উপহার।
Reviews
There are no reviews yet.
Be the first to review “অন্ধকারের উৎস হতে” Cancel reply
Reviews
There are no reviews yet.