ছাপচিত্রকলা

প্রাগৈতিহাসিক গুহাগারে হাতের ছাপের চিহ্ন রয়েছে। চীনে সর্বপ্রথম গ্রন্থ ছাপা হয় ৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে। জাপানের ‘ইউকি-ই' আন্দোলনের উডকাট প্রিন্টের বিষয়বস্তু ছিলো 'ফুজির শত দৃশ্য। ইউরোপে ডুরারই সর্বপ্রথম উডকাট প্রক্রিয়ায় শৈল্পিকভাবে ছাপচিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসেন। ক্রমেই অন্তলীন পদ্ধতিতে চিত্র ছাপাইয়ে শিল্পীরা উদ্যোগী হন। লিথোগ্রাফি মাধ্যমে চিত্র নির্মাণে অপরিমেয় দক্ষতা প্রদর্শন করেন দমিয়ের। শিল্পী গয়া, ভেনগণ, হেনরি মাতিস এবং কিউবিস্ট শিল্পী পাবলো পিকাসো ছাপচিত্রে অবদান রাখেন। ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকায় স্ক্রিনপ্রিন্টের সূচনা ঘটে। অবিভক্ত বাংলায় মুদ্রণশিল্পের আর্বিভাব হয় ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে। কলকাতার বটতলার অশিক্ষিত খোদাই শিল্পীরা কাঠখোদাই প্রক্রিয়ায় পৌরাণিক কাহিনি, ঐতিহাসিক ও সামাজিক ঘটনানির্ভর ছবি ছাপাই করেন। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামপদ ব্যানার্জীর উন্নত ছাপাই চিত্র, হ্যাভেল, নন্দলাল বসু প্রমুখের প্রচেষ্টায় নব বঙ্গীয় কলাশিল্পে বিচিত্রাসভায় স্বতন্ত্র ধারায় ছাপচিত্রের উত্তরণ ঘটে। বাংলাদেশে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আর্ট স্কুলে ছাপচিত্র চর্চার দ্বার উন্মোচিত হয়। হবিবুর রহমান, সফিউদ্দীন আহমেদ, মোহাম্মদ কিবরিয়া এদেশের ছাপাই চিত্রের শিক্ষাগুরু। স্বাধীনতা উত্তর এদেশের ছাপচিত্রকলায় রঙ, রেখা ও নানা ফর্মে আধুনিক শিল্পধারায় চিত্র ছাপাইয়ে রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার প্রমুখ শিল্পী এগিয়ে আসেন।