বিদেশ সোনালী দিনে

ভেরােনিক আসন সংলগ্ন টেবিলটিতে মাথা রেখে ঘুমিয়ে। কাঁধের ওপর ছড়ানাে ঘন রেশমি চুল ।। জিনসের জ্যাকেটটি পাশের সিটে। ছয় আসনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় যাত্রী মােটে আমরা দুজন। আমস্টার্ডাম থেকে ব্রাসেলস হয়ে প্যারিস যাচ্ছে ট্রেনটি। খুব দ্রুত ছুটছে ট্রেনটি। মাঝখানে একবার কিছু সময়ের জন্য দাঁড়াল ব্রুক্সেসেল মিদি স্টেশনে। আমি তখন ছমাস আগে এখানে কাটানাে একটি সপ্তাহ মনে করতে চাইলাম। ওই সময় আমার যারা সঙ্গী ছিল তাদের কাউকেই আর সেভাবে প্যারিসে এবার পাওয়া যাবে । প্যারিস এখন আমার কাছে অনেকটা শূন্য নগরীর মতােই। অথচ সহস্র রগড়ে কত না উপভােগ্য ছিল এক সময়। আক্ষরিকভাবেই সেখানকার পথে পথে হেঁটেছি আমরা। শহরের উপকণ্ঠের নির্জন পানশালায় কেটেছে ভর সন্ধ্যা, স্যুজে দ’অরসি, বঁদা কিংবা পাবলাে পিকাসােতে গেছে আলস্যভরা দিন। নগরীর হাঁসফাস। থেকে স্বস্তির জন্য বুলনের অরণ্যে বহুবার করেছি। কলরব। সেখানকার বস্তি আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে কিন্তু সেকেন্ড হ্যান্ড বাজারের জুয়াে আর তরুণ দম্পতির ঝগড়ায় অনুভব করেছি ফরাসি জীবনের ফাকি। ভেরােনিক কাশছে, খুকখুক। গুটিসুটি মারার মতাে করছে অল্প শীতে। পাশে একটি বই। জর্জ অরওয়েলের অ্যানিমেল ফার্ম। মালবােরর প্যাকেট। লাইটার। ভেরােনিক জেগে ওঠে। আমার দিকে অল্প হেসে গায়ে জড়িয়ে নেয় তার জ্যাকেটটি। একটু গ্যাজ ওয়াটার পান করে আবার ঘুমানাে শুরু করে সে। ওর সুন্দর মুখাবয়বে ফুটে থাকে ফরাসি আভিজাত্য। ভেরােনিক প্যারিসের মেয়ে । বিদেশ সােনালি দিনে এই প্যারিসকে কেন্দ্র করে ইউরােপ-আফ্রিকার ছটি দেশ ভ্রমণের চমকপ্রদ বয়ান