যদি মন কাঁদে

জ্যামাইকার বাড়ির তিনতলার এটিকে বসে ছবি আঁকছেন হুমায়ুন আহমেদ। ছবিতে শেষ বিকেলের সােনারং ফুটিয়ে তুলবেন ভেবেছিলেন। রঙটা ঠিকঠাক আসছে না। মেঘের রং হয়ে যাচ্ছে কালাে। কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছেন না। জলরঙে কোনাে সমস্যা নেই তাে! রবীন্দ্রনাথের গান কি মনঃসংযােগ কেড়ে নিচ্ছে ? আজ সকাল থেকে তাঁর মনে রবীন্দ্রনাথের একটা গান বেজে চলেছে ‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে, আঁধার করে আসে আমায় কেন বসিয়ে রাখ একা দ্বারের পাশে রবীন্দ্রনাথ কোথা থেকে পেয়েছিলেন এ ভাষা, সুর ? অদৃশ্য কোনাে ভাগ্যদেবতা কি তাঁকে দিয়ে এসব লিখিয়ে নিয়েছেন ? হুমায়ূন আহমেদের নিজের অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল গল্প-উপন্যাস লিখতে গিয়ে দেখা যায়, একপর্যায়ে পাত্রপাত্রীর নিয়তি তার। নিয়ন্ত্রণে থাকে না। কোনাে অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক যেন পাত্রপাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করে। অনেক কিছুই তাে করা হলাে একজীবনে, আর কত ? 'নন্দিত নরকে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’ আর ‘অচিনপুর দিয়ে শুরু। তারপর কত শত লেখা! নাটক লেখা, সিনেমা বানানাে, গান লেখা...। জীবনের এই পড়ন্ত বিকেলে এসে হুমায়ূন আহমেদের মনে হয়, জীবন এত ছােট কেন ?...