একশো ভূতের বাকসো

ভূত বিশাস করেন না এমন মানুষের সংখ্যাই এখন বেশি। কিন্তু ভূতকে ভয় পায় না এমন কাউকে আমি কখনই দেখিনি। বিশেষ করে খুব ডাকাবুকো সাহসী ছেলেমেয়েরাও দেখেছি, শুধু ভূতের গল্প পড়েই ভয় পেয়েছে আচ্ছা রকম। এখানে আর একটা কথাও মনে রাখা ভালাে, পৃথিবী জুড়েই ভূতের এমন দাপট—এই বিজ্ঞানের যুগেও বেশ বিস্ময়ের উদ্রেক করে। বিশেষ করে, সাহিত্যের সাম্রাজ্যে তাে ভূতরাই এখনও কয়েক কদম এগিয়ে। ভূতের গল্প পেলে এখনও ছােট বড় সব বয়েসের পাঠকই একটু বেশি কৌতূহলী হয়ে ওঠে। নিজের চোখে দেখেছি, ভূত বিশ্বাস করেন না যে মানুষটি—ভূতের কথা উঠলে যিনি বিজ্ঞানের যুক্তি নিয়ে এগিয়ে আসেন তর্কযুদ্ধে—তিনিও ভূতের গল্প পেলে দরকারি কাজের কথাও ভুলে যান। | বিশ্বসাহিত্যের বিখ্যাত সব ভূতের গল্পগুলির কথা এখানে তুলছি না—বরং বাংলা সাহিত্যের কথা একটু বলি। বাংলায় প্রায় সব বিখ্যাত লেখক এবং লেখিকারাই লিখেছেন একাধিক ভূতের গল্প। সব গল্পেই যে গা ছমছম করে এমন নয়, ভূতেদের নিয়ে মজার গল্পও লিখেছেন অনেকে। সে সব গল্প পড়তে পড়তে শুধু যে হাসি পায় তাই নয়—মনটাও ভালাে হয়ে যায়। আমি নিজেও তাই চেষ্টা করি, ভয় দেখানাে ভূতের গল্প লেখার চেয়ে—ভূত নিয়ে মজার গল্পই বেশি লিখতে। এই সংকলনে অবশ্য সবরকম ভূতই ধরে দেবার চেষ্টা করেছি আমরা। আগেই বলেছি, শুধু। ছােটরা নয়, সব বয়েসের প্রায় সব্বাই কিন্তু ভূতের গল্প পড়তেই বেশি ভালােবাসেন। সম্পাদনার সময় সে কথা আমরা কেউ বিস্মৃত হইনি। বিশেষ করে এই সংকলনটি সম্পাদনার ক্ষেত্রে এই সময়ের দুজন ছােটদের লেখক যখন সঙ্গে থেকে সহযােগিতা করেছেন আমাকে। গল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পুণ্ডরীক চক্রবর্তী এবং নিরুপম ঘােষাল দুজনেই দেখেছি আন্তরিকভাবে সংগ্রহ করে এনেছেন এক একটি লেখা। তারা দুজনেই এই সময়ের শিশুসাহিত্যের উল্লেখযােগ্য লেখক। তাই তাদের মতামত ও পছন্দকেও আমি সম্মান দেবার চেষ্টা করেছি সাধ্যমত। যদিও পছন্দ করা সব লেখার জায়গা হল না শেষ পর্যন্ত।