প্রটোকল ব্যবস্থাপনা ও আন্তর্জাতিক শিষ্টাচার

“A Guide to Diplomatic Practice” শীর্ষক ক্লাসিক গ্রন্থের লেখক ও বিশ্ববরেণ্য কূটনীতিবিদ স্যার আর্নেষ্ট স্যাটো (Sir Ernest Satow) -এর মতে, ‘প্রটোকল’ শব্দটি ল্যাটিন ‘প্রটোকলাম’ (Protocollum) থেকে উদ্ভূত। এ দ্বারা মূলত একটি রেজিস্টার (বহি) কে বুঝাতাে যার মধ্যে বিভিন্ন সরকারি দলিলপত্র আঠা দিয়ে লাগিয়ে রাখা হতাে। পরবর্তীতে এই শব্দটি দ্বারা বিভিন্ন দলিলপত্রাদি তৈরির জন্য ব্যবহৃত একটি নির্দিষ্ট ফরম (Form used in drawing up such documents) কে বুঝানাে হতাে এবং কূটনীতিতে প্রটোকল বলতে একটি রেজিস্টারকে বুঝাতাে যার মধ্যে একটি সম্মেলনের বিভিন্ন কার্যবিবরণী সংরক্ষিত থাকতাে। স্যার স্যাটো আরাে বলেন যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রীগণের মধ্যে আনুষ্ঠানিক পত্রাদি বিনিময়কালে এবং বিভিন্ন ধরণের কূটনৈতিক দলিলপত্র (যেমন চুক্তি, কনভেনশন, ঘােষণাপত্র, অনুমােদন, পরিচয়পত্র এবং রাষ্ট্রনায়ক কর্তৃক অন্য রাষ্ট্রনায়ককে প্রেরিত পত্রাদি) প্রণয়নকালে অনুসরণীয় রীতি-নীতিকে বুঝাতেও প্রটোকল শব্দটি ব্যবহৃত হয়। ১.২ প্রটোকলের দ্বিমাত্রিকতা: প্রটোকল একটি দ্বিমাত্রিক শব্দ। প্রটোকল’ শব্দটি দ্বারা একদিকে যেমন কতিপয় লিখিত দলিলপত্রকে বুঝানাে হয়, অন্যদিকে তেমনি এ দ্বারা প্রথাগত কূটনৈতিক শিষ্টাচারকেও বুঝানাে হয়ে থাকে। মার্কিন কূটনীতিবিদ জন আর উড (John R Wood) এবং ফরাসি কূটনীতিবিদ জা সেরেস (Jean Serres) তাদের বিখ্যাত 218 'Diplomatic Ceremonial and Protocol- Procedures and Practices' এ মত প্রকাশ করেন যে, উৎপত্তিগতভাবে প্রটোকল বলতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিলের প্রথম অংশকে বুঝাতাে যার মধ্যে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের বিবরণ লিপিবদ্ধ রাখা হতাে। কিন্তু এখন তা কিছু বিধিমালাকে বুঝায় যার মাধ্যমে একটি দেশের সরকারি কর্তৃপক্ষসমূহ আনুষ্ঠানিকতা সম্পর্কিত নীতিমালার প্রয়ােগ করে থাকেন। আমরা প্রটোকলের শেষােক্ত মাত্রা নিয়েই বিস্তারিত আলােচনা করবাে। তবে এখানে প্রথমােক্ত মাত্রাটি সম্পর্কেও একটু ধারণা দেয়ার প্রয়ােজন বােধ করছি।