Skip to Content
গহন কোন বনের ধারে

Price:

350.00 ৳


৫৫টি প্রোগ্রামিং সমস্যা ও সমাধান
৫৫টি প্রোগ্রামিং সমস্যা ও সমাধান
360.00 ৳
360.00 ৳
পৌরুষ, যৌনতা আর লিঙ্গ-রাজনীতি
পৌরুষ, যৌনতা আর লিঙ্গ-রাজনীতি
400.00 ৳
400.00 ৳

গহন কোন বনের ধারে

https://pathakshamabesh.com/web/image/product.template/23531/image_1920?unique=2574a58

350.00 ৳ 350.0 BDT 350.00 ৳

Not Available For Sale


This combination does not exist.

Terms and Conditions
30-day money-back guarantee
Shipping: 2-3 Business Days

 Delivery Charge (Based on Location & Book Weight)

 Inside Dhaka City: Starts from Tk. 70 (Based on book weight)

 Outside Dhaka (Anywhere in Bangladesh): Starts from Tk. 150 (Weight-wise calculation applies)

 International Delivery: Charges vary by country and book weight — will be informed after order confirmation.

 3 Days Happy ReturnChange of mind is not applicable

 Multiple Payment Methods

Credit/Debit Card, bKash, Rocket, Nagad, and Cash on Delivery also available. 

১৯৯৪ সালে যখন দ্বিজেন শর্মার ‘গহন কোন বনের ধারে’ বই আকারে বেরিয়েছিলো তখন ক্লাস ফোরের ছাত্র আমি। তখনও তিন গোয়েন্দার সন্ধানই পাই নি, দ্বিজেন শর্মার এই বইয়ের সন্ধান পাওয়া তো বাতুলতা। পড়ার গন্ডি তখন কেবল ইত্তেফাকের ‘টারজান’ কার্টুনে এসে পৌঁছেছে। আরো দুই বছর পরে ক্লাস সিক্সে উঠে সর্বপ্রথম মহস্বল শহরের একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরীতে যাই; ‘আউট বই’ পড়ার বদঅভ্যাসের গোড়াপত্তন এখান থেকেই। ‘গহন কোন বনের ধারে’ –এর প্রথম প্রকাশের প্রায় দুই দশক পরে দিন কয়েক আগে যখন বইটি পড়ি, তখন লেখার ঢং দেখে বুঝতে কষ্ট হয় নি এই বই মূলত আরো বছর তেরো আগেই হাতে পাওয়া উচিত ছিলো। কিশোর-তরুণদের প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে আগ্রহী করার নৈতিক তাড়না থেকেই বইটি প্রকাশ করেছিলেন লেখক। বিজ্ঞানের খটখটে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত লেখক এমন মমত্ব মিশিয়ে স্বকীয় স্টাইলে উপস্থাপন করেছেন যে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। ফলে ঠিক যে বয়েসের উপযোগী করে বইয়ের লেখনী- সে বয়স বহু আগে পেছনে ফেলে বহুদুর পথ চলার পরও বইটি শেষ না করা পর্যন্ত শান্তি পাই নি, যেন এক নিমিষে ফিরে গিয়েছিলাম ফেলে আসা কৈশোরে! মোট তিনটি আলাদা স্বাদের লেখা নিয়ে এ বই। প্রথম লেখা ‘সুদূর কোন নদীর পারে’-তে ছোটখাটো একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মোড়কে পৃথিবীতে প্রাণসৃষ্টির আদিপর্ব, বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধি, ওজনস্তরের বিপর্যয়, বিগত শতাব্দীগুলোতে পরিবেশদূষণের তুনলনামূলক মাত্রা, ফুকুয়োকার চাষপদ্ধপদ্ধতি ইত্যাদি চমকপ্রদ বিষয়সমূহ আলোকপাত করা হয়েছে। বইয়ের মূল চরিত্র ‘তজব তরফদার’ প্রত্যন্ত গ্রামের এক স্কুল শিক্ষক, যিনি প্রকৃতি- পরিবেশ সম্পর্কে বেশ সচেতন। তবে এ গল্পকে ‘নির্ভেজাল বিজ্ঞান কল্পকাহিনী’ বলতে লেখক নিজেই অনেকটা সন্দিহান; কেননা গল্পে যে ‘সুদূর কোন নদীর পারে’র কথা বলা হয়েছে লেখন সেখানে বিচরণ করেছিলেন ১৯৬৫ এর শীতকালে। আর গল্পে এখানে বিচরণ করতে গিয়েই লেখকের সাথে পরিচয় ঘটে অদ্ভুত চরিত্র ‘তজব তরফদার’-এর। ...গল্পচ্ছলে কত-শত অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব-তথ্যের সন্ধান পায় আমাদের কিশোর মন! বইয়ের দ্বিতীয় লেখা ‘গহন কোন বনের ধারে’ মূলত আত্মজৈবনিক। লেখকের শৈশবে সিলেটের পাথারিয়া পাহাড়ের বাগানবাড়িতে কাটানো দিনগুলোর চমৎকার দৃশ্যকল্প ফুটে উঠেছে এই লেখায়। লেখার মূল চরিত্রগুলো শোভা বুড়ো, কপচে, রোগা –এরা সত্যিকারের রক্তমাংশের মানুষ। পরিবেশ-গাছপালা-বন্যপ্রাণীর প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল ‘শোভাবুড়ো’ চরিত্রের মত অন্য কোন চরিত্র বোধকরি বাংলা সাহিত্যে নেই। এই ‘শোভাবুড়ো’র কথা একটু না বললেই নয়। এককালে শোভাবুড়োর পূর্বপুরুষেরা ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে চা বাগানের কাজে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে এসেছিলো। শোভাবুড়ো কখোনো কোন প্রাণীকে মারতে দেয় না, গাছের সাথে কথা বলে পরম মমতায়, কখোনো কখোনো শিশু দ্বিজেন’কে নিয়ে যায় বনের গহনে অদ্ভুত সুন্দর কোন জায়গায় (কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌছবার ঠিক আগ মুহুর্তে শিশু দ্বিজেনের চোখ বেঁধে দেয়- চোখ খুলে লেখক নিজেকে আবিস্কার করে এক টুকরো সবুজ স্বর্গে) । লেখকের ভাষায়, ‘ বনে কোথায় ঝরাপাতার স্তুপ দেখলে বুড়ো আমাদের মাটিতে শুইয়ে পাতা দিয়ে গা ঢেকে দিতো। আমরা ওপরের দিকে চেয়ে থাকতাম, গাছের মাথার ফাঁকে ফাঁকে আকাশের নীল, ভাসন্ত সাদা মেঘ উঁকি দিতো। উঁচুতে, অনেক উঁচুতে উড়ন্ত চিল বা শকুন দেখলে আমাদের পাখি হওয়ার সাধ হতো- অনেক উঁচুতে গাছের ডালে ডালে পাতার সবুজে সবুজে উড়ে বেড়ানো, তারপর এক সময় বনের বাঁধন ছেড়ে বিস্তীর্ণ নীলাকাশে অবাধ বিচরণ। কিছুক্ষণ পর বুড়ো আমাদের মুখটাও পাতা দিয়ে ঢেকে দিতো। আমরা চোখ বুজতাম। সে আমাদের মাটিতে মিশে যেতে বলতো। আমরা তাই ভাবতাম এওবং কোনো কোনো দিন ঘুমিয়েও পড়তাম’। ...এই অদ্ভুত চরিত্র শোভাবুড়ো একদিন বায়না ধরে সে নিজের দেশে যাবে, যে জায়গার নাম বাদে আর কিছুই জানে না সে। সবাই তাকে যতই বোঝায় সেখানে তার কেউ নেই, আত্মীয় থেকে থাকলেও এখন আর তাকে চিনবে না-কিন্তু শোভা বুড়োর এক গো। অগত্যা গল্পের মতন এই চরিত্র-শোভাবুড়ো- একদিন ট্রেনে চেপে বসে। পরবর্তীতে শোভাবুড়োর আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি আর কোনদিন! বইয়ের সর্বশেষ লেখা ‘আদিসখা চিরসখা’ মূলত ‘সারমেয় কাহিনী’ (কুকুর কাহিনী)। রবীন্দ্রনাথের কুকুর বিষয়ক কবিতা (‘আরোগ্য’ কাব্যগ্রন্থের ১৪ নাম্বার কবিতা) থেকে শুরু করে জীবনানন্দের সৃষ্ট কুকুরচরিত্র ‘কেতু’ কিংবা জ্যাক লন্ডনের ‘হোয়াইট ফ্যাং’- কামুর ‘আউটসাইডার’ এর সলমন বুড়ো ও তার কুকুর- কিংবা ঋকবেদ-এ কুকুর উপাখ্যান প্রভৃত্তি চমকপ্রদ বিষয়সমূহ ফুটে উঠেছে এ লেখাটিতে। বিষয়বস্তু হিসেবে ‘কুকুর’ অতি সাধারণ হলেও বিভিন্ন ধরণের আলাদা আলাদা স্বাদের দূর্লভ তথ্য সন্নিবেশিত হওয়ায় লেখাটি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। রুশদেশে লেখকের প্রবাস জীবনে কুকুর পালনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা গল্পচ্ছলে শুনিয়েছেন লেখক এই লেখায়। গল্পগুলো চমকপ্রদ। ...ছোট্টবেলায় বাবা-মায়ের কড়া স্বৈরাচারী আচরণের কারণে খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কুকুর পুষতে না পারার ক্ষতটা নতুন করে জেগে উঠলো এই লেখা পড়ে! এবার বই থেকে পাওয়া কিছু তথ্যঃ #প্রাণসৃষ্টির আদিপর্বে বাতাসে অঢেল কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকলেও মুক্ত অক্সিজেন ছিলো না। ২০০ কোটি বছর আগে সমুদ্রে প্রচুর সবুজ শৈবাল জন্মালে ব্যাপক সালোকসংশ্লেষণ শুরু হয় এবং তার প্রেক্ষিতে বাতাসে অক্সিজেন সঞ্চিত হতে থাকে। এভাবে আরো ১০০ কোটি বছর পর বাতাস অক্সিজেনস্পৃক্ত হলে জীবজগতের বিবর্তনে গতিসঞ্চার ঘটে। আজকের পৃথিবীর বেশীরভাগ গাছপালা ও জীবজন্তুই গত ৭০ কোট বছরের মধ্যে জন্মিয়ে বিকশিত-বিবর্তিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসে পৌছেছে। #সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ৬০০০ কোটি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ১২০০০ কোটি টন পানি হতে বছরে উৎপন্ন ১০০০ কোটি টন জৈবপদার্থই গোটা জীবজগতের খাদ্যভান্ডার। #নুহের মহাপ্লাবন হয়েছিলো আনুমানিক আট হাজার বছর আগে। মূলত এটি ছিলো শেষ হিমযুগের বরফগলা পানি। দশহাজার বছর আগে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্থের বরফ ঢাকা একটি বিস্তীর্ণ এলাকার বরফ গলতে থাকে। ফলশ্রুতিতে মহাপ্লাবন। #পৃথিবীতে আসা সূর্যের আলোর একটা বড় অংশ তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয় ও ফিরে যাওয়ার সময় বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসে অনেকটা আটকে গিয়ে পৃথিবীকে গরম রাখে। এই গ্যাসটুকু না থাকলে পৃথিবীতে আসা সব তাপ হারিয়ে যেতো, পৃথিবী হীম হয়ে যেত! অর্থাৎ, বাতাসে কার্বন–ডাই-অক্সাইড বাড়লে মেরুর বরফ গলে মহাপ্লাবন আবার কমলে সূর্যের তাপ আটকে রাখতে না পারার দরুণ হিমযুগ। কার্বন-ডাই-অক্সাইড তাই ‘শাখের করাত’! #মহাশূন্যে বিকীর্ণ সূর্যের আলোর যে ২০০ কোটি ভাগের একভাগ পৃথিবীতে পৌছায় তারও সিংহভাগ বায়ুমন্ডলের ধুলিকনা ও অন্যান্য প্রতিফলকে হোঁচট খেয়ে আবার ফেরত যায়। নইলে সবকিছু জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যেত। আবার বায়ুমন্ডলের আয়নস্তরের গোড়ায় অতিবেগুনি রশ্মির প্রায় গোটাটাই ওজোন বলয়ে আটকা পড়ে যায়। আর সামান্য যেটুকু ফাঁক গলিয়ে ভূপৃষ্ঠে পৌছায় তা প্রাণের বিকাশের জন্য সহায়ক। কিন্তু মনুষ্যপ্রজাতির কর্মকান্ডে ইতোমধ্যে ওজোনমন্ডলে মার্কিন দেশের সমান একাধিক গর্ত তৈরী হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে অতিবেগুনী রশ্মির আধিক্য এখন মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকী! #একটি ক্লোরিন অণু এক লাখ ওজোন অণুকে ধ্বংস করে। ফলে ওজোন স্তরে ক্রমাগত ফাটল ধরছে। এসি, এরোসল, বডি স্প্রে’র সিএসসি গ্যাস অতিবেগুণী রশ্মির আঘাতে ভেঙ্গে গিয়ে ‘ঘাতক’ ক্লোরিন অনু ছড়ায়। #সারাজীবনে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ তার ওজনের ৬০০ গুণ আবর্জনা সৃষ্টি করে। #আমেরিকায় বার্ষিক উৎপন্ন প্লাস্টিকের কাপের মালা দিয়ে পৃথিবীকে ৪৩৬ বার ঘের দেয়া যায়। #রেইনফরেস্ট (শীকরারণ্য) পৃথিবীর স্থলভাগের মাত্র ২ ভাগ হলেও বৃক্ষ, জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গের প্রজাতির অর্ধেকের বেশীই এখানকার বাসিন্দা।

Title

গহন কোন বনের ধারে

Publisher

Shahitya Prakash

Category

  • Children Science
  • ১৯৯৪ সালে যখন দ্বিজেন শর্মার ‘গহন কোন বনের ধারে’ বই আকারে বেরিয়েছিলো তখন ক্লাস ফোরের ছাত্র আমি। তখনও তিন গোয়েন্দার সন্ধানই পাই নি, দ্বিজেন শর্মার এই বইয়ের সন্ধান পাওয়া তো বাতুলতা। পড়ার গন্ডি তখন কেবল ইত্তেফাকের ‘টারজান’ কার্টুনে এসে পৌঁছেছে। আরো দুই বছর পরে ক্লাস সিক্সে উঠে সর্বপ্রথম মহস্বল শহরের একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরীতে যাই; ‘আউট বই’ পড়ার বদঅভ্যাসের গোড়াপত্তন এখান থেকেই। ‘গহন কোন বনের ধারে’ –এর প্রথম প্রকাশের প্রায় দুই দশক পরে দিন কয়েক আগে যখন বইটি পড়ি, তখন লেখার ঢং দেখে বুঝতে কষ্ট হয় নি এই বই মূলত আরো বছর তেরো আগেই হাতে পাওয়া উচিত ছিলো। কিশোর-তরুণদের প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে আগ্রহী করার নৈতিক তাড়না থেকেই বইটি প্রকাশ করেছিলেন লেখক। বিজ্ঞানের খটখটে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত লেখক এমন মমত্ব মিশিয়ে স্বকীয় স্টাইলে উপস্থাপন করেছেন যে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। ফলে ঠিক যে বয়েসের উপযোগী করে বইয়ের লেখনী- সে বয়স বহু আগে পেছনে ফেলে বহুদুর পথ চলার পরও বইটি শেষ না করা পর্যন্ত শান্তি পাই নি, যেন এক নিমিষে ফিরে গিয়েছিলাম ফেলে আসা কৈশোরে! মোট তিনটি আলাদা স্বাদের লেখা নিয়ে এ বই। প্রথম লেখা ‘সুদূর কোন নদীর পারে’-তে ছোটখাটো একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মোড়কে পৃথিবীতে প্রাণসৃষ্টির আদিপর্ব, বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধি, ওজনস্তরের বিপর্যয়, বিগত শতাব্দীগুলোতে পরিবেশদূষণের তুনলনামূলক মাত্রা, ফুকুয়োকার চাষপদ্ধপদ্ধতি ইত্যাদি চমকপ্রদ বিষয়সমূহ আলোকপাত করা হয়েছে। বইয়ের মূল চরিত্র ‘তজব তরফদার’ প্রত্যন্ত গ্রামের এক স্কুল শিক্ষক, যিনি প্রকৃতি- পরিবেশ সম্পর্কে বেশ সচেতন। তবে এ গল্পকে ‘নির্ভেজাল বিজ্ঞান কল্পকাহিনী’ বলতে লেখক নিজেই অনেকটা সন্দিহান; কেননা গল্পে যে ‘সুদূর কোন নদীর পারে’র কথা বলা হয়েছে লেখন সেখানে বিচরণ করেছিলেন ১৯৬৫ এর শীতকালে। আর গল্পে এখানে বিচরণ করতে গিয়েই লেখকের সাথে পরিচয় ঘটে অদ্ভুত চরিত্র ‘তজব তরফদার’-এর। ...গল্পচ্ছলে কত-শত অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব-তথ্যের সন্ধান পায় আমাদের কিশোর মন! বইয়ের দ্বিতীয় লেখা ‘গহন কোন বনের ধারে’ মূলত আত্মজৈবনিক। লেখকের শৈশবে সিলেটের পাথারিয়া পাহাড়ের বাগানবাড়িতে কাটানো দিনগুলোর চমৎকার দৃশ্যকল্প ফুটে উঠেছে এই লেখায়। লেখার মূল চরিত্রগুলো শোভা বুড়ো, কপচে, রোগা –এরা সত্যিকারের রক্তমাংশের মানুষ। পরিবেশ-গাছপালা-বন্যপ্রাণীর প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল ‘শোভাবুড়ো’ চরিত্রের মত অন্য কোন চরিত্র বোধকরি বাংলা সাহিত্যে নেই। এই ‘শোভাবুড়ো’র কথা একটু না বললেই নয়। এককালে শোভাবুড়োর পূর্বপুরুষেরা ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে চা বাগানের কাজে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে এসেছিলো। শোভাবুড়ো কখোনো কোন প্রাণীকে মারতে দেয় না, গাছের সাথে কথা বলে পরম মমতায়, কখোনো কখোনো শিশু দ্বিজেন’কে নিয়ে যায় বনের গহনে অদ্ভুত সুন্দর কোন জায়গায় (কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌছবার ঠিক আগ মুহুর্তে শিশু দ্বিজেনের চোখ বেঁধে দেয়- চোখ খুলে লেখক নিজেকে আবিস্কার করে এক টুকরো সবুজ স্বর্গে) । লেখকের ভাষায়, ‘ বনে কোথায় ঝরাপাতার স্তুপ দেখলে বুড়ো আমাদের মাটিতে শুইয়ে পাতা দিয়ে গা ঢেকে দিতো। আমরা ওপরের দিকে চেয়ে থাকতাম, গাছের মাথার ফাঁকে ফাঁকে আকাশের নীল, ভাসন্ত সাদা মেঘ উঁকি দিতো। উঁচুতে, অনেক উঁচুতে উড়ন্ত চিল বা শকুন দেখলে আমাদের পাখি হওয়ার সাধ হতো- অনেক উঁচুতে গাছের ডালে ডালে পাতার সবুজে সবুজে উড়ে বেড়ানো, তারপর এক সময় বনের বাঁধন ছেড়ে বিস্তীর্ণ নীলাকাশে অবাধ বিচরণ। কিছুক্ষণ পর বুড়ো আমাদের মুখটাও পাতা দিয়ে ঢেকে দিতো। আমরা চোখ বুজতাম। সে আমাদের মাটিতে মিশে যেতে বলতো। আমরা তাই ভাবতাম এওবং কোনো কোনো দিন ঘুমিয়েও পড়তাম’। ...এই অদ্ভুত চরিত্র শোভাবুড়ো একদিন বায়না ধরে সে নিজের দেশে যাবে, যে জায়গার নাম বাদে আর কিছুই জানে না সে। সবাই তাকে যতই বোঝায় সেখানে তার কেউ নেই, আত্মীয় থেকে থাকলেও এখন আর তাকে চিনবে না-কিন্তু শোভা বুড়োর এক গো। অগত্যা গল্পের মতন এই চরিত্র-শোভাবুড়ো- একদিন ট্রেনে চেপে বসে। পরবর্তীতে শোভাবুড়োর আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি আর কোনদিন! বইয়ের সর্বশেষ লেখা ‘আদিসখা চিরসখা’ মূলত ‘সারমেয় কাহিনী’ (কুকুর কাহিনী)। রবীন্দ্রনাথের কুকুর বিষয়ক কবিতা (‘আরোগ্য’ কাব্যগ্রন্থের ১৪ নাম্বার কবিতা) থেকে শুরু করে জীবনানন্দের সৃষ্ট কুকুরচরিত্র ‘কেতু’ কিংবা জ্যাক লন্ডনের ‘হোয়াইট ফ্যাং’- কামুর ‘আউটসাইডার’ এর সলমন বুড়ো ও তার কুকুর- কিংবা ঋকবেদ-এ কুকুর উপাখ্যান প্রভৃত্তি চমকপ্রদ বিষয়সমূহ ফুটে উঠেছে এ লেখাটিতে। বিষয়বস্তু হিসেবে ‘কুকুর’ অতি সাধারণ হলেও বিভিন্ন ধরণের আলাদা আলাদা স্বাদের দূর্লভ তথ্য সন্নিবেশিত হওয়ায় লেখাটি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। রুশদেশে লেখকের প্রবাস জীবনে কুকুর পালনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা গল্পচ্ছলে শুনিয়েছেন লেখক এই লেখায়। গল্পগুলো চমকপ্রদ। ...ছোট্টবেলায় বাবা-মায়ের কড়া স্বৈরাচারী আচরণের কারণে খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কুকুর পুষতে না পারার ক্ষতটা নতুন করে জেগে উঠলো এই লেখা পড়ে! এবার বই থেকে পাওয়া কিছু তথ্যঃ #প্রাণসৃষ্টির আদিপর্বে বাতাসে অঢেল কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকলেও মুক্ত অক্সিজেন ছিলো না। ২০০ কোটি বছর আগে সমুদ্রে প্রচুর সবুজ শৈবাল জন্মালে ব্যাপক সালোকসংশ্লেষণ শুরু হয় এবং তার প্রেক্ষিতে বাতাসে অক্সিজেন সঞ্চিত হতে থাকে। এভাবে আরো ১০০ কোটি বছর পর বাতাস অক্সিজেনস্পৃক্ত হলে জীবজগতের বিবর্তনে গতিসঞ্চার ঘটে। আজকের পৃথিবীর বেশীরভাগ গাছপালা ও জীবজন্তুই গত ৭০ কোট বছরের মধ্যে জন্মিয়ে বিকশিত-বিবর্তিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসে পৌছেছে। #সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ৬০০০ কোটি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও ১২০০০ কোটি টন পানি হতে বছরে উৎপন্ন ১০০০ কোটি টন জৈবপদার্থই গোটা জীবজগতের খাদ্যভান্ডার। #নুহের মহাপ্লাবন হয়েছিলো আনুমানিক আট হাজার বছর আগে। মূলত এটি ছিলো শেষ হিমযুগের বরফগলা পানি। দশহাজার বছর আগে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্থের বরফ ঢাকা একটি বিস্তীর্ণ এলাকার বরফ গলতে থাকে। ফলশ্রুতিতে মহাপ্লাবন। #পৃথিবীতে আসা সূর্যের আলোর একটা বড় অংশ তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয় ও ফিরে যাওয়ার সময় বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসে অনেকটা আটকে গিয়ে পৃথিবীকে গরম রাখে। এই গ্যাসটুকু না থাকলে পৃথিবীতে আসা সব তাপ হারিয়ে যেতো, পৃথিবী হীম হয়ে যেত! অর্থাৎ, বাতাসে কার্বন–ডাই-অক্সাইড বাড়লে মেরুর বরফ গলে মহাপ্লাবন আবার কমলে সূর্যের তাপ আটকে রাখতে না পারার দরুণ হিমযুগ। কার্বন-ডাই-অক্সাইড তাই ‘শাখের করাত’! #মহাশূন্যে বিকীর্ণ সূর্যের আলোর যে ২০০ কোটি ভাগের একভাগ পৃথিবীতে পৌছায় তারও সিংহভাগ বায়ুমন্ডলের ধুলিকনা ও অন্যান্য প্রতিফলকে হোঁচট খেয়ে আবার ফেরত যায়। নইলে সবকিছু জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যেত। আবার বায়ুমন্ডলের আয়নস্তরের গোড়ায় অতিবেগুনি রশ্মির প্রায় গোটাটাই ওজোন বলয়ে আটকা পড়ে যায়। আর সামান্য যেটুকু ফাঁক গলিয়ে ভূপৃষ্ঠে পৌছায় তা প্রাণের বিকাশের জন্য সহায়ক। কিন্তু মনুষ্যপ্রজাতির কর্মকান্ডে ইতোমধ্যে ওজোনমন্ডলে মার্কিন দেশের সমান একাধিক গর্ত তৈরী হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে অতিবেগুনী রশ্মির আধিক্য এখন মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকী! #একটি ক্লোরিন অণু এক লাখ ওজোন অণুকে ধ্বংস করে। ফলে ওজোন স্তরে ক্রমাগত ফাটল ধরছে। এসি, এরোসল, বডি স্প্রে’র সিএসসি গ্যাস অতিবেগুণী রশ্মির আঘাতে ভেঙ্গে গিয়ে ‘ঘাতক’ ক্লোরিন অনু ছড়ায়। #সারাজীবনে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ তার ওজনের ৬০০ গুণ আবর্জনা সৃষ্টি করে। #আমেরিকায় বার্ষিক উৎপন্ন প্লাস্টিকের কাপের মালা দিয়ে পৃথিবীকে ৪৩৬ বার ঘের দেয়া যায়। #রেইনফরেস্ট (শীকরারণ্য) পৃথিবীর স্থলভাগের মাত্র ২ ভাগ হলেও বৃক্ষ, জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গের প্রজাতির অর্ধেকের বেশীই এখানকার বাসিন্দা।
    No Specifications