যাযাবর
কজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক , সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক। কর্মজীবনে 'যাযাবর' ছদ্মনামে তাঁর লেখা 'দৃষ্টিপাত' গ্রন্থটি পঞ্চাশের দশকে বাঙালি পাঠক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল দৈনিক "যুগান্তর" পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজ নিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে "শ্রীপথচারী" ছদ্মনামে রাজনৈতিক কলমে লিখতেন। এর পর ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের উচ্চ পদস্থ কর্মচারী হয়ে দিল্লি যান এবং দীর্ঘদিন কাজ করার পর প্রেস কাউন্সিলের সচিব পদে উন্নীত হয়ে অবসর নেন। কর্মজীবনে তদানীন্তন নেতৃস্থানীয় বহু ব্যক্তির সান্নিধ্যে এসেছেন সাথে সাহিত্যরচনা করেছেন "যাযাবর" ছদ্মনামে। কর্মজীবনে তাঁর উপরে দায়িত্ব আসে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গান্ধীজির বাণী সংগ্রহ করার। সোদপুরে গান্ধী জির কাছে গেলে তিনি বলেন বাণী দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয় - তাঁর মন ভেঙ্গে গেছে। গান্ধীজির কাজ থেকে এমন কথা শুনে তাঁর মনে হয়েছিল তিনি যেন এক ঐতিহাসিক ট্রাজেডি প্রত্যক্ষ করছেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে কর্মজীবনেই "দৃষ্টিপাত" রম্যরচনা লিখে যাযাবর নামে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় লেখক হয়ে ওঠেন। ছোটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সংকলন মিলিয়ে তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা ছয় এবং প্রত্যেকটি গ্রন্থই সুরচিত ও সুখপাঠ্য। 'দৃষ্টিপাত' (১৯৪৭) 'জনান্তিকে' (১৯৫২) 'ঝিলম নদীর তীরে' (১৯৫৪) 'লঘুকরণ' (১৯৬৪) 'হ্রস্ব ও দীর্ঘ' 'যখন বৃষ্টি নাম' (১৯৮৩) 'দৃষ্টিপাত' সমকালীন বাংলা সাহিত্যে সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক হিসাবে বিবেচিত হওয়ায়বিনয় মুখোপাধ্যায় সাহিত্যকর্মের জন্য ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহ দাস পুরস্কার এবং ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'বিদ্যাসাগর পুরস্কার' লাভ করেন।