ড. সনাতন গোম্বামী
ড. সনাতন গোম্বামী (১৪৮৮ - ১৫৫৮) ছিলেন চৈতন্য মহাপ্রভূর একজন প্রধান শিষ্য। শ্রী গোস্বামী গৌড়ীও বৈষ্ণব তত্তের ওপর প্রচুর ভক্তিমূলক বই রচনা করেন। তিনি ছিলেন বৃন্দাবনের ষড় গোস্বামীর অন্যতম, তার ছোটভাই ছিলেন রূপ গোস্বামীভক্তি-রত্নাকর অনুযায়ী সনাতন গোস্বামীর পূর্বপুরুষরা হলেন:[১] সর্বজ্ঞ জগৎগুরু যিনি ছিলেন ভরদ্বাজ গোত্রের একজন যজুর্বেদী ব্রাহ্মণ এবং অধুনা ভারতের কর্ণাটকের রাজা৷ তাঁর পুত্র অনিরুদ্ধ ছিলেন একজন প্রথিতযশা বেদজ্ঞ৷ অনিরুদ্ধের দুই পুত্র হলেন রূপেশ্বর (জ্যেষ্ঠ) ও হরিহর৷ তাঁরা তাঁদের গুনাবলীর জন্য সুপ্রসিদ্ধ ছিলেন৷ রূপেশ্বর যেমন শাস্ত্রের জ্ঞানী ছিলেন, হরিহর তেমন কলাবিদ্যা ও অস্ত্রবিদ্যায় জ্ঞানী ছিলেন৷ তাঁদের পিতার মৃত্যুর পর দুই ভ্রাতাই রাজ্য পরিচালনার উত্তরাধিকার পেলেন কিন্তু শীঘ্রই হরিহর সমস্ত ক্ষমতা নিজের কুক্ষিগত করার পর তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রূপেশ্বরকে সস্ত্রীক রাজ্য থেকে বিতাড়িত করেন৷ রূপেশ্বর পৌলস্ত্যদেশে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই বসবাস করতে থাকেন রূপেশ্বরের পুত্র পদ্মনাভ ছিলেন অতি বুদ্ধিমান এবং তিনি সহজেই চতুর্বেদ অধ্যয়ন সম্পন্ন করে খ্যাতিলাভ করেন৷ পরবর্তীকালে পদ্মনাভ পৌলস্ত্যদেশ ত্যাগ করে গঙ্গা-তীরবর্তী নবহট্টে (অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নৈহাটি শহর) আগমন করেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন৷[২] এখানে তাঁর ১৮ টি কন্যা ও ৫ টি পুত্র জন্ম নেয়৷ তাঁর পাঁচ পুত্র হলেন- পুরুষোত্তম (জ্যেষ্ঠ), জগন্নাথ, নারায়ণ, মুরারী ও মুকুন্দ (কনিষ্ঠ)৷ মুকুন্দের পুত্র কুমার৷ কুমার অত্যন্ত সৎব্রাহ্মণ ছিলেন৷ ইনি পরবর্তীকালে নিজের জন্মস্থান নৈহাটি ত্যাগ করে পূর্ববঙ্গের (অধুনা বাংলাদেশ) বাকলা-চন্দ্রদ্বীপে গমন করেন যদিও তাঁর বাকি সহোদরেরা জন্মভূমি নৈহাটিতেই থেকে যান৷ কুমার পূর্ববঙ্গের যশোরের ফতেহবাদ পরগণাতেও একটি বাড়ি তৈরি করান৷ কুমারের বহু পুত্রের মধ্যে সনাতন (জ্যেষ্ঠ), রূপ (মধ্যম) ও বল্লভ (কনিষ্ঠ) এর নাম উল্লেখ্য৷ তাঁরা গৌড়ের রামকেলিতে বসবাস করতেন এবং তাঁদের জ্ঞান ও ভক্তির জন্য প্রসিদ্ধিলাভ করেছিলেন৷ অন্যমতে সনাতন গোস্বামীর পূর্বপুরুষ কর্ণাটদেশ থেকে সরাসরি গৌড়ে আগমন করেন[৩] এবং অধুনা মালদহ জেলার ইংরেজবাজারের নিকট রামকেলিতে পুরুষাণুক্রমে বসবাস করতে থাকেন