মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম
মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম পরাধীনতার নাগপাশ থেকে এদেশকে যারা মুক্ত করলেন জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অন্যতম মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম। ‘এসপি মাহবুব’ নামে তিনি সমধিক পরিচিত। ন্যায়-নীতিতে অটল, সদা হাস্যোজ্জ্বল আলােকিত মাহবুবের জন্ম ১৯৪৫ সালের ৩ জানুয়ারি বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জে । পিতা আলতাফ উদ্দিন আহমদ, মাতা জেবুন্নেসা বেগম। তাঁর। পূর্বপুরুষের বসবাস ছিল মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ি উপজেলার রব নগরকান্দি। তিনি ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। একই সময়ে সাংবাদিকতায়ও ডিপ্লোমা অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে তল্কালীন পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে যােগদান করেন এবং বিভিন্ন। দায়িত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন। তিনি ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩ থেকে জুলাই ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ঢাকার পুলিশ সুপার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ঝিনাইদহ ও সশস্ত্র সংগ্রামের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরে অনুষ্ঠিত প্রথম স্বাধীন। বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিকে ‘গার্ড অব অনার প্রদানে নেতৃত্ব দান করেন। সুদীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সাতক্ষীরার ভােমরা, বেলেডাঙ্গা, কাকডাঙ্গাসহ বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাকিস্তানিদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাঁকে ‘বীরবিক্রম খেতাবে ভূষিত করেন সরকার। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর পরই তার ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে দীর্ঘদিন কারা নির্যাতন ভােগ করেন। ১৯৭৬ সালের ২ ডিসেম্বর তার। পিতা পরলােকগমন করলে তিনি কয়েক ঘণ্টার জন্য প্যারােলে সশস্ত্র পুলিশ প্রহরায় কারামুক্ত হয়ে পিতার শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে মুক্ত হয়ে তিনি শিল্প, ব্যবসা ও রাজনীতিতে আত্মনিয়ােগ করেন। বর্তমানে মুক্তিযােদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের সমন্বয়ে গঠিত। বিভিন্ন সামাজিক ও সেবাধর্মী সংগঠনের সাথে জড়িত। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি সবসময় প্রস্তুত। পারিবারিক জীবনে সহধর্মিণী নূপুর আহমদ, পুত্র আরনীব মাহবুব, কন্যা। তাহিয়া মাহবুব ও ফারনাজ মাহবুবকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার।