উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

বাংলা শিশু ও কিশাের সাহিত্যের অন্যতম রূপকার উপেন্দ্রকিশােরের জন্ম ১৮৬৩ খ্রিঃ ১০ মে বর্তমান বাংলাদেশের অন্তর্গত ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামের বিখ্যাত জমিদার বংশে। তাঁর পিতা কালীনাথ রায়চৌধুরী ছিলেন নানা শাস্ত্রে পণ্ডিত। লােকে তাকে বলত শ্যামসুন্দর মুন্সী। তার স্ত্রীর নাম ছিল জয়তারা। শ্যামসুন্দর ও জয়তারার আট সন্তানের মধ্যে কামদারঞ্জন হল তৃতীয়। এই কামদারঞ্জনেরই। পরে নাম হয় উপেন্দ্রকিশাের। শ্যামসুন্দরের এক জ্ঞাতিভ্রাতা হরিকিশাের রায় ছিলেন অপুত্রক। বছর পাঁচেক বয়স হলে তিনি কামদারঞ্জনকে দত্তক নিয়ে উপেন্দ্রকিশাের নাম দেন। | ছেলেবেলাতেই উপেন্দ্রকিশােরের অসাধারণ মেধা ও তীক্ষ্ণবুদ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। ভর্তি হয়েছিলেন ময়মনসিংহ স্কুলে। কিন্তু স্কুলের পড়ার চেয়ে গান-বাজনা, বাঁশি বাজানাের দিকেই ছিল বেশি ঝােক। তবুও দেখা যেত, পরীক্ষায় বরাবরই ভাল ফল হচ্ছে। পাঠ্য বিষয়ের মধ্যে। কেবল অংক আর বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহটা বােঝা যেত। আর ছিল ছবি আঁকার বাতিক। আর নিজের চেষ্টাতেই চমৎকার ছবি আঁকতে শিখেছিলেন। অঙ্কুর থেকে পূর্ণ বিকশিত তাঁর এ সকল গুণ পরবর্তীকালে উপেন্দ্রকিশােরের জীবন ও সৃজনশীল কর্মকৃতিত্বের বিশেষ সহায়ক হয়েছিল। ১৮৮০ খ্রিঃ ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে বৃত্তি নিয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করেন। এরপর তাকে ভর্তি করানাে হল কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে। পরে মেট্রোপলিটন ইনসটিটিউট থেকে। ১৮৮৪ খ্রিঃ একুশ বছর বয়সে বি. এ. পাশ করেন। | গান, বেহালা-বাঁশি বাজানাে, ছবি আঁকার সঙ্গে ছাত্র অবস্থা থেকেই উপেন্দ্রকিশাের লেখালিখির চর্চাও করতেন। সেই সময়ে প্রধানতঃ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও জীব-বিজ্ঞান বিষয়ে তথ্যমূলক রচনাই লিখতেন। এ রকম কয়েকটি রচনা প্রকাশিত হয়েছিল তার ছাত্রাবস্থাতেই সখা নামের ছােটদের মাসিকপত্রে।