বঙ্গবন্ধুর বাজেট ১৯৭১-৭৫

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে শুধু স্বাধীনতাই এনে দেননি; স্বাধীনতার সাথে সাথেই তিনি এদেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্নও দেখিয়েছিলেন। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশকে সােনার বাংলা হিসেবে গড়ে তােলার কাজ শুরু করে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশকে নিম্ন আয়ের দেশ হতে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদায় আসীন করেন পরিকল্পিত উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে আধুনিক রাষ্ট্রের এক রূপরেখাও প্রণয়ন করেছিলেন তিনি। টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের রােল মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন; তা প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-১৯৭৮) প্রতিফলিত হয়। এ পরিকল্পনার প্রধান উদ্দশ্যে ছিল : দারিদ্র্য হ্রাস, অর্থনীতি পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করা ও অর্থনীতির প্রধান প্রধান খাতের উৎপাদন বাড়ানাে, বছরে কমপক্ষে ৫.৫ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, অত্যাবশ্যকীয় ভােগ্যপণ্যের উৎপাদন বাড়ানাে, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা, বছরে কমপক্ষে ২.৫ শতাংশ হারে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করা এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানাে। বঙ্গবন্ধু যখন দেশের উন্নয়নের জন্য বৃহদাকার কর্মসূচি নিয়ে যাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, দুর্ভাগ্যবশত তখন আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরােধী শক্তি কর্তৃক তাঁকে সপরিবারে কাপুরুষােচিতভাবে হত্যা করা হয়। রচিত হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় বাঙালি জাতির দীর্ঘ সংগ্রাম আর আশা-আকাক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ মুক্তিযুদ্ধের যে মহান চেতনায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন সে চেতনাসহ বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা ভুলুষ্ঠিত হয়ে যায় এ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর সেসব উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে ।