করোনাকালের গল্প

বাংলাদেশ, ভারত ও আমেরিকার ছত্রিশ জন বাঙালি গল্পকারের গল্প নিয়ে বই আকারে সাজানাে হয়েছে বাংলা সাহিত্যে করােনা বিষয়ক প্রথম গল্প সংকলন। "করােনাকালের গল্প"। ২০১৯ সালের শেষদিকে চীনের উহান ও আরও কিছু প্রদেশে সংক্রমিত করােনা ভাইরাস অচিরেই সারা বিশ্বে ছড়ায় অতিদ্রুত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে মহামারী/অতিমারী হিসেবে ঘােষণাও দেয়। প্রায় সারা বিশ্বই আকস্মিক এ ব্যাধির কবলে আক্রান্ত হয়। কয়েক লক্ষ মানুষ অদ্যাবধি মৃত্যুবরণ করেন। আমেরিকা, ইউরােপ ও এশিয়ার কিছু দেশে এ ব্যাধি রীতিমতাে মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। যারা এতে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অনেকেই নিজেদের আক্রান্ত হবার ব্যাপারটি আগেভাগে জানতে পারেননি। ফলে এর সংক্রমণ ক্রমশ বেড়েছে। এক বছরেরও বেশি সময় যাবত বিশ্ব এর কবলে। দিশাহারা হয়ে আছে। বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনাে খােলেনি। চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য খাতে স্থবিরতা ও অর্থনীতিতে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের জীবিকা ও দিনযাপন, পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক পরিসরে নানা ধরনের প্রতিকূলতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। শিশু ও বয়স্ক মানুষের বিবিধ সংকট, এ ব্যাধিতে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি প্রবল। মানবিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক বন্ধন আর আগের মতাে নেই। সবটা মিলে যে আন্তঃমানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে আমরা এ দুঃসময় অতিবাহিত করছি, তা নানাভাবে সৃষ্টিশীল লেখায়, শিল্পে, সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। "করােনাকালের গল্প"-তেও চলমান সংকটের রূপরেখা, বিবিধ বিপর্যয়ের চালচিত্র, এমনকি এ দুর্যোগ অতিক্রমের মানবিক প্রয়াস ও আশাবাদ প্রতিফলিত হয়েছে। এ সংকলনের ব্যাপারে কলকাতা থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কবি-কথাশিল্পী-সম্পাদক সপ্তদ্বীপা অধিকারী। তিনি ভারতের গল্পকারদের গল্প সংগ্রহ, বাছাই ও সম্পাদনার গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর প্রতি অশেষ। কৃতজ্ঞতা। যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজটি শুরু করেছিলাম, তা অন্তিম পর্যায়ে খানিকটা বদলাতে হয়েছে। গল্পকারদের অনেকের প্রবল আগ্রহের কারণে তিন দফায় এ আয়ােজনের সময় বাড়াতে হয়েছে। ফলে ছত্রিশ জন গল্পকারের গল্পের সম্ভারে এটি পূর্ণতা পেয়েছে।