Skip to Content
হাজার বছর ধরে

Price:

180.00 ৳


শ্রেষ্ঠ গল্প (জেমস্ জয়েস) (বি.এস.কে)
শ্রেষ্ঠ গল্প (জেমস্ জয়েস) (বি.এস.কে)
220.00 ৳
220.00 ৳
আনন্দমেলা : ৫ জুন ২০২২
আনন্দমেলা : ৫ জুন ২০২২
50.00 ৳
50.00 ৳

হাজার বছর ধরে

https://pathakshamabesh.com/web/image/product.template/39799/image_1920?unique=a99a229

180.00 ৳ 180.0 BDT 180.00 ৳

Not Available For Sale


This combination does not exist.

Terms and Conditions
30-day money-back guarantee
Shipping: 2-3 Business Days

 Delivery Charge (Based on Location & Book Weight)

 Inside Dhaka City: Starts from Tk. 70 (Based on book weight)

 Outside Dhaka (Anywhere in Bangladesh): Starts from Tk. 150 (Weight-wise calculation applies)

 International Delivery: Charges vary by country and book weight — will be informed after order confirmation.

 3 Days Happy ReturnChange of mind is not applicable

 Multiple Payment Methods

Credit/Debit Card, bKash, Rocket, Nagad, and Cash on Delivery also available. 

মস্ত বড় অজগরের মতাে সড়কটা এঁকেবেঁকে চলে গেছে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতের মাঝখান দিয়ে। মােগলাই সড়ক। লােকে বলে, মােগল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের হাতে ধরা পড়বার ভয়ে শাহ সুজা যখন আরাকান পালিয়ে যাচ্ছিলাে তখন যাবার পথে কয়েক হাজার মজুর খাটিয়ে তৈরি করে গিয়েছিলাে এই সড়ক। দু-পাশে তার অসংখ্য বটগাছ। অসংখ্য শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে সগর্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই দীর্ঘকাল ধরে। ওরা এই সড়কের চিরন্তন প্রহরী। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা। মাঝে মাঝে ধানক্ষেত সরে গেছে দূরে। দু-ধারে শুধু অফুরন্ত জলাভূমি। অথৈ পানি। শেওলা আর বাদাবন ফাকে ফাকে মাথা দুলিয়ে নাচে অগুনতি শাপলা ফুল। ভাের হতে আশেপাশের গায়ের ছেলে-বুড়ােরা ছুটে আসে এখানে। একবুক পানিতে নেমে শাপলা তােলে ওরা। হৈ-হুল্লোড় আর মারামারি করে কুৎসিত গাল দেয় একে অন্যকে। বাজারে দর আছে শাপলার। এক আঁটি চার পয়সা করে। কিন্তু এমনও অনেকে এখানে শাপলা তুলতে আসে, বাজারে বিক্রি করে পয়সা রােজগার করা যাদের ইচ্ছে নয়। মন্তু আর টুনি ওদেরই দলে। ওরা আসে ধল-পহরের আগে, যখন পুব আকাশে শুকতারা ওঠে। তার ঈষৎ আলােয় পথ চিনে নিয়ে চুপিচুপি আসে ওরা। রাতের শিশিরে ভেজা ঘাসের বিছানা মাড়িয়ে ওরা আসে ধীরে ধীরে। টুনি ডাঙায় দাঁড়িয়ে থাকে। মন্তু নেমে যায় পানিতে। তারপর, অনেকগুলাে শাপলা তুলে নিয়ে, অন্য সবাই এসে পড়ার অনেক আগে সেখান থেকে সরে পড়ে ওরা। পরীর দীঘির পারে দুজনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। শাপলার গায়ে লেগে থাকা আঁশগুলাে বেছে পরিষ্কার করে। মন্তু বলে, বুড়া যদি জানে তােমারে আমারে মাইরা ফালাইবাে। টুনি বলে, ইস, বুড়ার নাক কাইটা দিমু না। নাক কাইটলে বুড়া যদি মইরা যায়। মইরলে তাে বাঁচি। বলে ফিক করে হেসে দেয় টুনি। বলে, পাখির মতাে উইড়া আমি বাপের বাড়ি চইলা যামু। বলে আবার হাসে সে, সে হাসি আশ্চর্য এক সুর তুলে পরীর দীঘির চার পাড়ে প্রতিধ্বনিত হয়। এ দীঘি এককালে এখানে ছিলাে না। আশেপাশের গায়ের ছেলে-বুড়ােদের প্রশ্ন করলে তারা মুখে-মুখে বলে দেয় এ দীঘির ইতিহাস। কেউ চোখে দেখেনি, সবাই শুনেছে। কেউ শুনেছে তার বাবার কাছ থেকে

জহির রায়হান

জহির রায়হান বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র জহির রায়হান, যিনি শুধু একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিকই নন, একাধারে ছিলেন গল্পকার, ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের অন্যান্য সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্রকারের তুলনায় অগ্রগামী, যার ফলে তাঁর কাজগুলো যুগে যুগে মানুষের দ্বারা হয়েছে প্রশংসিত ও সমাদৃত। ফেনী জেলার সোনাগাজি উপজেলার মজুপুর গ্রামে এই অসামান্য ব্যক্তি ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার নিয়ে তিনি কলকাতায় বাস করলেও ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তাঁরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে চলে আসেন। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে জহির রায়হান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৫৮ সালে এখান থেকে স্নাতক পাশ করেন। অসাধারণ প্রতিভাধর এই সাহিত্যিক সাংবাদিকতায় যোগ দিলেও পাশাপাশি সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন এবং জহির রায়হান এর বই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। জহির রায়হান এর বই সমূহ এর মধ্যে 'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসটি অত্যন্ত পাঠকনন্দিত এবং এর জন্য তিনি 'আদমজী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। জহির রায়হান এর বই সমগ্র এর মধ্যে আরো রয়েছে 'আরেক ফাল্গুন', 'শেষ বিকেলের মেয়ে', 'বরফ গলা নদী' ইত্যাদি উপন্যাস এবং 'সোনার হরিণ', 'মহামৃত্যু', 'জন্মান্তর', 'ম্যাসাকার' ইত্যাদি গল্পগ্রন্থ। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালে তিনি তাঁর ভাই শহীদুল্লাহ্ কায়সার-কে খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হন, এবং এরপর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি কখনো। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর 'বাংলা একাডেমি পুরস্কার', বাংলাদেশ সরকারের 'স্বাধীনতা পুরস্কার' ইত্যাদি সম্মাননায় ভূষিত হন।

Title

হাজার বছর ধরে

Author

জহির রায়হান

Publisher

Anupam Prokashani

Language

Bengali / বাংলা

মস্ত বড় অজগরের মতাে সড়কটা এঁকেবেঁকে চলে গেছে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতের মাঝখান দিয়ে। মােগলাই সড়ক। লােকে বলে, মােগল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের হাতে ধরা পড়বার ভয়ে শাহ সুজা যখন আরাকান পালিয়ে যাচ্ছিলাে তখন যাবার পথে কয়েক হাজার মজুর খাটিয়ে তৈরি করে গিয়েছিলাে এই সড়ক। দু-পাশে তার অসংখ্য বটগাছ। অসংখ্য শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে সগর্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই দীর্ঘকাল ধরে। ওরা এই সড়কের চিরন্তন প্রহরী। কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা। মাঝে মাঝে ধানক্ষেত সরে গেছে দূরে। দু-ধারে শুধু অফুরন্ত জলাভূমি। অথৈ পানি। শেওলা আর বাদাবন ফাকে ফাকে মাথা দুলিয়ে নাচে অগুনতি শাপলা ফুল। ভাের হতে আশেপাশের গায়ের ছেলে-বুড়ােরা ছুটে আসে এখানে। একবুক পানিতে নেমে শাপলা তােলে ওরা। হৈ-হুল্লোড় আর মারামারি করে কুৎসিত গাল দেয় একে অন্যকে। বাজারে দর আছে শাপলার। এক আঁটি চার পয়সা করে। কিন্তু এমনও অনেকে এখানে শাপলা তুলতে আসে, বাজারে বিক্রি করে পয়সা রােজগার করা যাদের ইচ্ছে নয়। মন্তু আর টুনি ওদেরই দলে। ওরা আসে ধল-পহরের আগে, যখন পুব আকাশে শুকতারা ওঠে। তার ঈষৎ আলােয় পথ চিনে নিয়ে চুপিচুপি আসে ওরা। রাতের শিশিরে ভেজা ঘাসের বিছানা মাড়িয়ে ওরা আসে ধীরে ধীরে। টুনি ডাঙায় দাঁড়িয়ে থাকে। মন্তু নেমে যায় পানিতে। তারপর, অনেকগুলাে শাপলা তুলে নিয়ে, অন্য সবাই এসে পড়ার অনেক আগে সেখান থেকে সরে পড়ে ওরা। পরীর দীঘির পারে দুজনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়। শাপলার গায়ে লেগে থাকা আঁশগুলাে বেছে পরিষ্কার করে। মন্তু বলে, বুড়া যদি জানে তােমারে আমারে মাইরা ফালাইবাে। টুনি বলে, ইস, বুড়ার নাক কাইটা দিমু না। নাক কাইটলে বুড়া যদি মইরা যায়। মইরলে তাে বাঁচি। বলে ফিক করে হেসে দেয় টুনি। বলে, পাখির মতাে উইড়া আমি বাপের বাড়ি চইলা যামু। বলে আবার হাসে সে, সে হাসি আশ্চর্য এক সুর তুলে পরীর দীঘির চার পাড়ে প্রতিধ্বনিত হয়। এ দীঘি এককালে এখানে ছিলাে না। আশেপাশের গায়ের ছেলে-বুড়ােদের প্রশ্ন করলে তারা মুখে-মুখে বলে দেয় এ দীঘির ইতিহাস। কেউ চোখে দেখেনি, সবাই শুনেছে। কেউ শুনেছে তার বাবার কাছ থেকে
No Specifications