হযরত ওমর (কবি)

আব্দুল মওদুদ

আব্দুল মওদুদ আবদুল মওদুদ ১ জুন ১৯০৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন তাঁর গ্রামের বাড়ি বর্তমান জেলার খস্তকোষ থানার ওয়ারী গ্রামে। শৈশবেই। পিতৃ-মাতৃহীন হয়েও শুধুমাত্র নিজের আগ্রহ ও বুদ্ধিমত্তায় গ্রামের স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে লেখাপড়া করে আই. এ. পাশ করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস নিয়ে বিএ (অনার্স) ও। এমএ পাশ করেন। ১৯৩৩ সালে আইন পাশ করেন। ১৯৩৬ । সালে বেঙ্গল জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে বিচারক হিসেবে বাংলার বিভিন্ন স্থানে চাকরি করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তিনি কলকাতায় আলীপুর কোর্টের বিচারক ছিলেন। এসময় তিনি অপশন দিয়ে পূর্ববঙ্গে চলে আসেন এবং পাকিস্তান সরকারের বিচার বিভাগে চাকরি করেন। ১৯৬১ সালে তিনি ঢাকা জেলা দায়রা জজ হিসেবে কাজ করার সময় পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বিচার বিভাগ আইন। মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব হিসেবে নিয়ােগ পেয়ে করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থান করেন। এসময় তিনি সরকারি। প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে জেনেভা ও নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা। হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়ােগ পান। অবসরগ্রহণের পর তিনি কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বাের্ড এবং নজরুল একাডেমীর সভাপতি হন। তিনি ইতিহাস পরিষদ ও এশিয়াটিক সােসাইটির সভাপতি ছিলেন। ছােটবেলা থেকে বই কেনা ও পড়ার প্রতি তাঁর ছিল গভীর আগ্রহ। বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে মেধা ও মননের চর্চা তাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে দেশ, মানুষ ও সমাজ নিয়ে ভাবতে। তিনি সংস্কৃত, ফার্সি, আরবি, ইংরেজি ভাষা শিখে ঐ ভাষার বইও পড়তেন। কলকাতায় কলেজে পড়ার সময় তার লেখা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় দৈনিক। আজাদ, মাসিক মােহাম্মদী, সওগাত এবং ইত্তেহাদ পত্রিকায়। ঢাকার সবগুলাে দৈনিক ও মাসিক সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। তার বিচার বিভাগের অভিজ্ঞতায় লেখা গল্প ‘ক্রিমিনাল’ সমকাল সাহিত্য পত্রিকায় ধারাবাহিক ছাপা হলে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। একজন সুবক্তা, গবেষক, চিন্তাবিদ ও ইতিহাসবিদ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৭০ সালের ২১ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ : কামেল নবী (১৯৪৪ কলকাতা), ইসলাম ইউরােপকে যা শিখিয়েছে, ভারতে ওহাবী আন্দোলন (১৯৬৯), মুসলিম মনীষা (১৯৫৫), হযরত ওমর (১৯৬৫), ক্রিমিনাল, শাহ আবদুল লতিফ ভিটাই (১৯৬৪), মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ : সংস্কৃতির রূপান্তর (১৯৭০) এবং উইলিয়াম হান্টারের ‘দি ইন্ডিয়ান মুসলমান’-এর অনুবাদ (১৯৬৮), আর্নল্ড টয়েনবির ‘পৃথিবী ও পাশ্চাত্য’-এর অনুবাদ