তারাশঙ্কর রচনাবলী (১-২৫ খণ্ড একত্রে)

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮-১৯৭১) তার দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে যা সৃষ্টি করে গেছেন—তার পরিমাণ ম নয়। তার বিচিত্র শাখাশ্রয়ী রচনাসমূহকে একত্রিত করে তারাশঙ্কর রচনাবলী খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশিত হ5েছে, পৃথক আকারেও কিছু বই মুদ্রিত অবস্থায় এখনও পাওয়া যায়। তার জ্যেষ্ঠপুত্র সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায় পিতার সাহিত্যকীর্তির সযত্ন সংরক্ষণে মনােযােগী ছিলেন। কিন্তু পিতা তারাশঙ্কর এতাে সব জানা-অজানা পত্রিকায় লিখতেন যে তাঁর পক্ষেও সমস্ত রচনার হদিশ রাখা সম্ভবপর হয়ে উঠত না। পরবর্তীকালে তাঁর কনিষ্ঠপুত্র সরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়-ও এ বিষয়ে যত্নশীল হন। ফলে দুর্যোগ’-এর মততা, গল্প (তিনখণ্ডে সংকলিত তারাশঙ্করের গল্পগুচ্ছের বাইরে) আবিষ্কৃত হয় এবং রচনাবলীতে স্থান করে নেয়। তবুও বিপুল পরিমাণ রচনা অগ্রন্থিত অবস্থায় পত্র-পত্রিকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে। তারাশঙ্করের জশতবর্ষের কথা মনে রেখে আমি এগুলি সংগ্রহ করতে থাকি। একাজে আমাকে সবচেয়ে সাহায্য করেছেন বন্ধুবর অশােক উপাধ্যায়। একাজ তিনি স্বভাববশত করেছেন এবং অগৌণে এই সংকলনের সহভাগের দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর অনুসন্ধিৎসু চোখে কিছুই বাদ থাকে না। এই সংকলনের কাজ করছি জেনে মিত্র ও ঘােষের দুই কর্ণধার আমাদের ভানুদা ও মণীশদা এটি কেশ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন—শ্ৰীসরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীহিমাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় এই আগ্রহকে মর্থন জানান। ফলে এই অগ্রন্থিত গ্রন্থটি প্রকাশের অবকাশ পেয়েছে। দুটি পূর্ণ মূল্যবান সংগ্রহ রচনাবলীতে অসংকলিত একটি কালাে মেয়ের কথা’ ও ‘সুতপার তপস্যা’ এখানে সংকলিত হয়ে খণ্ডটিকে সমৃদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের অগ্রন্থিত রচনাবলীর মধ্যে উপন্যাস, ছছাটগল্প, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ, চিঠিপত্র— ই আছে। এগুলি সংকলন করতে আমাকে বিপুল পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়েছে। জাতীয় গ্রন্থাগার, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, বিশ্বভারতী রবীন্দ্রভবন গ্রন্থাগার, আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রন্থাগার, আকাশবাণী গ্রন্থাগার থেকে এগুলি সংগ্রহ করতে হয়েছে। এঁদের কর্তৃপক্ষের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার অবধিমাত্র নেই। আমি নিজেই জানি, আরও কিছু রচনা বাইরে থেকে গেল, কিন্তু সেগুলি এখনই সংগ্রহের উপায় না থাকায় আপাতত এখানেই থামতে হয়েছে। পরবর্তী সংস্করণে বাকিগুলি বের চেষ্টা করবাে। তারাশঙ্করের জন্মশতবর্ষে আমাদের এই প্রয়াস, তাকে আমাদের সশ্রদ্ধ প্রণতি।