আর্দশ হিন্দু হোটেল (গ্রন্থতীর্থ)

‘আমি কেমন করে লেখক হলাম, এ আমার জীবনের আমার নিজের কাছেই একটা অদ্ভুত ঘটনা। —লিখেছেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সত্যিই, বাংলা সাহিত্যে বিভূতিভূষণের আবির্ভাব ও সিদ্ধি অবাক করার মতাে। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র তখন রীতিমতাে সৃষ্টিশীল, তারই মধ্যে অখ্যাত বিভূতিভূষণ পাঠকের মন জয় করলেন। সারল্য আর রূপকথাধর্মী রসের গুণে। তিনি দেখিয়েছেন, চারপাশের পরিচিত দেশকালের অন্দরেও অপরূপ কল্পবসন্ত। লুকিয়ে রয়েছে, নিকষ বাস্তবের ভিতরেও রসমাধুরী বিদ্যমান। জীবন ও প্রকৃতিতে দেখেছেন। শিশুর চোখে, মায়ের মমতায়। সমাজ-অর্থনীতির জটিল আবর্ত নিয়ে কুট তর্কে না গিয়ে জীবন ও প্রকৃতির পরম্পরা বুনেছেন। সাবলীল গল্প-কথনে এবং বাংলা-সাহিত্যে নিজের ব্যাতিক্রমী স্থানাঙ্ক ঠিক করে নিয়েছেন। নিজেই লিখেছেন, ‘এক শ্রেণির মানুষ আছে, যাদের চোখে কল্পনা সব সময়। মােহ-অঞ্জন মাখিয়ে দিয়ে রেখেছে।' —এই আত্মকথনই সম্ভবত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণের আত্মপরিচয়।