পথের পাঁচালী : সৃজনের দুই মুখ সত্যজিৎ ও বিভূতিভূষণ

‘পথের পাঁচালী' আধুনিক বাংলা শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির জগতে একটি দ্বিরায়তনিক পরিসর তৈরি করেছে। তার একটি রূপ-কথাসাহিত্যের, আরেকটি চলচ্চিত্রের। একটি পাঠের, অন্যটি দর্শনীয়। বিভূতিভূষণ পথের পাঁচালী না লিখলে সত্যজিৎ এমন এক বিশ্বজয়ী ছবি করতে পারতেন? .কিন্তু তফাৎ আছে, সেটা বুঝতে হবে প্রতি-তুলনায় । সত্যজিৎ বিভূতিভূষণের কোনও ভাষ্য পাল্টাননি, দেখিয়েছেন মাধ্যমের আরেকটি দিক। উপন্যাসের ভাষা আর চলচ্চিত্রের ভাষা যে বেশ আলাদা, সেটি আমরা প্রথম জানতে পারি 'পথের পাঁচালী' দেখে। এই সংকলনে এই দুই অনন্য স্রষ্টা ও তাঁদের অনবদ্য সৃষ্টিকে অবিচ্ছিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়েছে। সাহিত্য ও চলচ্চিত্র- দুই সৃষ্টির অভিমুখের সঙ্গে যাঁরা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন, যেমন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রমা বন্দ্যোপাধ্যায়, পথের পাঁচালী চলচ্চিত্রের সুরকার রবিশঙ্কর, ক্যামেরাম্যান সুব্রত মিত্র, অভিনেতা কানু বন্দ্যোপাধ্যায়, করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়, চুনিবালা প্রমুখের লেখায় ও অভিজ্ঞতায় এ-গ্রন্থ পথের পাঁচালী-র অন্তর-কথন হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে শঙ্খ ঘোষ, দিলীপকুমার রায়, পূর্ণেন্দু পত্রী, মৃণাল সেন, চিদানন্দ দাশগুপ্ত প্রমুখ বিদ্বজ্জনের লেখায় এই গ্রন্থ এক সরস-সচিত্র তথ্যবহুল নির্ভরযোগ্য হ্যান্ডবুক। বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের দ্বন্দ্ব ও সমন্বয় বুঝতে এই গ্রন্থ অপরিহার্য।