মওলানা ভাসানীর রচনা

মওলানা ভাসানীর রচনাবলি গ্রন্থ ভাসানীর চিন্তাধারা, জীবনজগতদৃষ্টি, জীবন, তার দেশ-কাল ও ঐতিহাসিক ভূমিকা বুঝবার জন্য যেমন সহায়ক হবে, তেমনি সহায়ক হবে আমাদের দেশের ঘটনাবহুল বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসকে বুঝবার জন্যও। ভাসানীর বক্তৃতা বিবৃতি নানাভাবে আগেও সংকলিত হয়েছে। কিন্তু তাঁর রচনাসমগ্র প্রকাশের উদ্যোগ এই প্রথম। মাও সে-তঙের দেশে গ্রন্থটি অত্যন্ত চমৎকার এবং গুরুত্বপূর্ণ। ভাসানীর ভাষা, রচনারীতি ও বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন, এবং জনচিত্তে এসবের প্রভাব ছিল তীব্র। ন্যাপ, কৃষক সমিতি ইত্যাদি যেসব সংগঠনের তিনি নেতা ছিলেন, সেগুলাের সভায়, সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য দিতেন এবং পুস্তিকা আকারে সেগুলাে প্রচার করা হত। গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে অনেক বিবৃতি ও বক্তব্য তিনি প্রচারপত্রের মাধ্যমেও প্রচার করতেন। এ গ্রন্থে সেসবই সংকলিত হয়েছে। ভাসানীর নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ও অবদান সংক্ষেপে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এ-কথাটি মনে রাখতে হবে যে, জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে আজ আমরা যে অবস্থায় উত্তীর্ণ হয়েছি, যাদের ভূমিকা ছাড়া এটা সম্ভবপর হত না, ভাসানী তাদেরই একজন। এই রচনাবলি অবলম্বন করে এবং আরাে নানা ঘটনা অবলম্বন করে এ বিষয়ে অনেক কিছু জানার সুযােগ আছে। তবে এ বিষয়ে আরাে অনুসন্ধানের, আরাে লেখার ও বিচার-বিবেচনার দরকার আছে। মওলানা ভাসানীর এই রচনাবলি আমাদের জাতীয় জীবনে নবচেতনার সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের রাজনীতির মান উন্নত হােক-বাজনাতি গণমুখী হােক। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কার সাধনে বিবেকবান চিন্তাশীল ব্যক্তিদের প্রচেষ্টা দেখা দিক।