রোহিঙ্গা : রাষ্ট্র সন্ধানী জাতি

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য রাখাইনে বসবাসকারী মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাম রােহিঙ্গা। বিগত প্রায় চার যুগ ধরে মিয়ানমারে সংঘটিত সহিংসতার মুখে বাস্তুভিটা ছেড়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে লাখ লাখ রােহিঙ্গা পালিয়ে আসে। তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই ছিল শিশু। মূলত এই বিতাড়িত জনগােষ্ঠীর মাধ্যমেই বিশ্ববাসী জানতে পারে রাখাইনে সংঘটিত বীভৎস, অমানবিক অত্যাচারের করুণ কাহিনী। বিভিন্ন সময়ে রােহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বাংলাদেশে। মিয়ানমার। সেনাবাহিনী কর্তৃক রােহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর জাতিগত নিধনযজ্ঞের ফলশ্রুতিতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বলপূর্বক বস্তুচ্যুত (forcibly displaced) ও অমানবিক নির্যাতনের শিকার প্রায় সাত লাখ রােহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত সময়ে বর্ধিত শরণার্থী সংকট বলে বর্ণনা করেছে বিশ্বসংস্থা জাতিসংঘ। বাংলাদেশে রােহিঙ্গা জনগােষ্ঠীর অবস্থানের কারণে স্থানীয় জনগােষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক জীবনে নানা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, স্থানীয় বাজারে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযােগ হ্রাস, চুরি-ছিনতাই, বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি ইত্যাদি। একই সাথে পাহাড়-বনভূমি উজাড়, কৃষিজমি বিনষ্টকরণ ইত্যাদি কারণে স্থানীয় পরিবেশের উপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব। পড়ছে। বিশ্বের অন্য কোন দেশ যে কাজটি করতে পারেনি, সেই অসাধ্য সাধন করে বিশ্বের দরবারে বাঙালি জাতিকে আরাে একবার গৌরবান্বিত করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযােগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মানবতার স্বার্থে রােহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেন। তিনি রােহিঙ্গাদের যেভাবে উষ্ণ হৃদয়ে বরণ করে নিয়েছেন, সেটা বিশ্বের অন্য কোনাে দেশের নেতার পক্ষে সম্ভব হয়নি। বিশ্ববাসী অবাক দৃষ্টিতে দেখেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অশ্রুসিক্ত নয়নে নিপীড়িত রােহিঙ্গা শিশু-নারীদের বুকে টেনে নিয়েছেন। রােহিঙ্গাদের যতার জালে আবদ্ধ করে বিশ্ব মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সে কারণেই তিনি আজ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের চোখে মাদার অব হিউম্যানিটি (Mother of Humanity)