একাত্তর (মাওলা)

যুদ্ধে যেতে চেয়েছিল সে। সবকিছু যখন ঠিকঠাক, তিনদিন পরই তাদের আটজনের একটা দল ট্রেনিংয়ের জন্য ওপারে রওনা হবে, তখনই ধরা। পড়ে গেল। ... কিন্তু এটাও তাে একটা যুদ্ধ। এ! যুদ্ধে তাকে জিততেই হবে। ওরা চেষ্টা করছে। শারীরিক অত্যাচার চালিয়ে, মনােবল ভেঙে দিয়ে, তার কাছ থেকে কথা বের করতে। গত কয়েকদিনে এমন অত্যাচার নেই যা ওরা তার ওপর করেনি। ... এক-এক ধরনের টর্চারের ওদের এক-একটা নাম আছে। সে কখনাে ভালাে করে সেগুলাে শুনবার বা মনে রাখার চেষ্টা করেনি। ওরা ঘরে ঢুকতেই তার শরীর-মন একরকম শক্ত হয়ে যায়। দাতে দাত চেপে সে নিজেকে তৈরি করে ফেলে। ওরা যখন অত্যাচার শুরু করে, অমানুষিক সে অত্যাচার, প্রথমদিকে মনে হয় আর বােধহয় সহ্য করতে পারবে না, তারপর একটা আচ্ছন্নতা। তাকে গ্রাস করে। এক সময় চেতনা হারিয়ে ফেলে সে। প্রথম ধাক্কাটা পার করাই শক্ত। ... সবচেয়ে কঠিন সময় হলাে যখন অত্যাচারের ফাকে ওরা তাকে কিছুটা সময় দেয়, স্বীকারােক্তি দেওয়ার জন্য। কিংবা হয়তাে নিজেরাই একটু জিরিয়ে নিতে। একটু পরই হয়তাে আরেক দফা, আরেক ধরনের অত্যাচার শুরু হবে, সেই অপেক্ষার মুহূর্তগুলাে। দু-একদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে সে একটা কৌশল বের করে নিয়েছে। ... ওই সময়টা নিজেকে সে অন্য এক জগতে নিয়ে যায়।