কিশোরসমগ্র (আখতারুজ্জামান ইলিয়াস) (মাওলা)

আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের এই খণ্ডে বিশ্বসাহিত্য থেকে গৃহীত আরাে ১৪টি গল্প প্রকাশিত হল মৈমনসিংহ গীতিকা, মহাভারত, ইলিয়াড, শাহনামা, আরব্য রজনীর গল্প , শেক্সপিয়রের টেম্পেস্ট, ডিকেন্সের ডেভিড কপারফিল্ড, জুলু কাহিনী ও চাকমা রূপকথার গল্প নিয়ে সহজ ভাষায় বলা এই কাহিনীগুলাে বেশ সুখপাঠ্য হয়ে উঠেছে। চিরায়ত সাহিত্যের প্রতি ইলিয়াসের যে-ভালােবাসা তার পরিচয় পাই যত্নের সঙ্গে লেখা এইসব গল্পগুলি পরতে পরতে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিষ্ঠিত চিরায়ত সাহিত্যের কাতারে বাংলা, জুলু এবং চাকমা। লােককাহিনীকে স্থান দিয়ে ইলিয়াস হয়তাে একথাই বােঝাতে চান যে মানুষের মুখে-মুখে দীর্ঘকাল জুড়ে প্রচলিত যে-কোনাে কাহিনীই চিরন্তন সাহিত্যের অন্তগর্ত। সনাতন সাহিত্যের স্কুলপাঠ্য সংস্করণগুলির মতাে আরাে কিছু লেখা ইলিয়াসের টাইপ-করা। কাগজপত্রে পাওয়া যায়। এইসব রচনা আরাে ছােটদের জন্য, সম্ভবত ক্লাস ফোরের শিক্ষার্থীদের জন্য লেখা হয়েছিল। এই লেখাগুলির শিক্ষণীয়। দিকটিই প্রাধান্য পেয়েছে। মহানবীর কথায় যেমন হাদিসের একটি কাহিনী অবলম্বনে হযরত মােহাম্মদ-এর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানানাে হয়েছে, তেমনি বেগম রােকেয়ার কাহিনীতেও মুক্ত ও বৈজ্ঞানিক চিন্তার প্রয়ােজনীয়তার কথা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে। আবার নাটোর ঘুরে আসি’ এবং ঢাকার চিঠি’তে আমাদের দেশের দুটো শহরের কিছু ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শনের। প্রতি শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। আর বই পড়ার আনন্দ’য় তাদের কেবল রূপকথার গল্পপাঠেই নয়, কিংবা রবীন্দ্র-নজরুল-সুকুমার রায়ের কবিতার প্রতিই নয়, বরং বিজ্ঞানপাঠেও আকৃষ্ট করা হয়েছে।